শার্শায় হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুর রসের ঐতিহ্য

যশোরের বেনাপোল ও শার্শা উপজেলার মাঠে আগের মতো খেজুর গাছ দেখা মেলে না। এখন আর রসের ভাঁড় নিয়ে গাছিদের তেমন গ্রামের পথে দেখা যায় না।
শীতকাল এলেই হরেক রকমের পিঠার আয়োজন হয়, কিন্তু খেজুর গাছের বিলুপ্তিতে রস আর মিলছে না। ফলে নানা রকমের পিঠার বাহার আর চোখে পড়ে না।
কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। এক সময় বেনাপোল ও শার্শার মাঠে-বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার দুই ধারে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। এখন কিছু কিছু খেজুর গাছ থাকলে তা সংরক্ষণ করাটা যেন আমরা গরজ মনে করছি না।
উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মোজাম্মেল হক বলেন, বাবা আমরা এক ১ টাকা দিয়ে এক ভাঁড় রস কিনেছি। এ রস দিয়ে খেজুরের গুড়, ভাপা পিঠের আয়োজন এক মহোৎসব চলতো। এখন এ কথা যেন কল্প কাহিনি। এখন প্রতি ভাঁড় রসের দাম ৩০০-৩৫০ টাকা।
শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে রসের সন্ধানে গাছিরা তৎপর।
গ্রামীণ ঐতিহ্য রক্ষায় ও রসের চাহিদা মেটাতে স্বরুপদা গ্রামের আলী হোসেন জানান, আমাদের ১৬টার মতো খেজুর গাছ রয়েছে। খেজুর বাগান থেকে প্রতিদিন ৬-৭ ভাঁড় খেজুর রস আহরণ কর থাকেন।
প্রতি ভাঁড় রস ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি করে বলে তিনি জানান।
বেনাপোল পোর্ট থানার রাজাপুর গ্রামের ৬৫ বছরের আব্দুল সালাম বলেন, ‘আমরা এখন অলস হয়ে গেছি।’
দোকান থেকে বিভিন্ন ঠান্ডা রঙিন পানীয় কিনে খাই, কিন্তু খেজুরের রস আহরণে প্রচেষ্টা আমাদের নেই। যে সব খেজুর গাছ আছে, সেগুলো আমরা রস আহরণের জন্য পরিচর্যা করছি না, কিভাবে সুমিষ্ট রস পাবো।’
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, খেজুর রস ও গুড় এদেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুড়-মুড়ি খেতে খেজুর রসের বিকল্প নেই। আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক খেজুর গাছ, সেগুলোকে পরিচর্য করা প্রয়োজন। গ্রাম বাংলার উৎসব ফেরাতে আমাদেরকে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি খেজুর গাছের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।(ঢাকা টাইমস/০৪জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন