সরাইলের ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ঢাকায়, কৃষক মুগ্ধ টাকায়!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিলের ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ঢাকায়। ফসলের আবাদ ছেড়ে কৃষক বেশি টাকার লোভে জমির মাটি বিক্রি করছেন। এতে উর্বরতা হারাচ্ছে জামি।
উপজেলার নদী-হাওর বেষ্ঠিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল এলাকার ভুইয়ারচর, নাল্লা ও তেলিকান্দির গোয়ালীচরে ১৫টি ভেকু দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। এতে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি, পরিণত হচ্ছে জলাশয়ে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে মাটি কেটে মানচিত্র থেকে উধাও করে দিচ্ছে কৃষিজমি।
সম্প্রতি সরেজমিনে পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর,পাকশিমুল, তেলিকান্দি মৌজার তিতাস নদীর পাড়ে ১৫টি ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটার চিত্র চোখে পড়ে। ১০টি বাল্কহেডে করে মাটি পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। এছাড়া ২০-২২টি মাহিন্দ্র ট্রাক্টরে করে মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি কাটছে একটি চক্র। পাকশিমুল পূ্র্বপাড়ার তিনজন ও বড়পাড়ার একজন বাসিন্দা এই চক্রটির মূল হোতা। ফসলি জমির মাটি কিনে ঢাকায় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা।
বেপরোয়া এই চক্রটিই আবার মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটায়। তাদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে কৃষকরা নগদ টাকায় মাটি বিক্রি করে ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ফসলি জমি ধ্বংসের জন্য শুধু মাটি ব্যবসায়ীরাই দায়ী নয়, জমির মালিকরাও দায়ী। মাটিখেকোদের নগদ টাকার লোভে পড়ছে জমির মালিকরা।
একই মন্তব্য করেন পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন। তিনি বলেন, ‘জমির মালিক নিজেরা মাটি বিক্রি করায় আমরা এটি ঠেকাতে পারছি না। বাধা দিলে তাৎক্ষণিক বন্ধ রাখলেও সুযোগ বুঝে আবার শুরু করে একই কাজ।’ এ বিষয়ে প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।
পাকশিমুল ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা প্রমোদলাল দেবনাথ জানান, এক সপ্তাহ আগে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে জেল ও তিনজনকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দুই দিন আগেও সরেজমিনে ঘুরে এসেছেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১১জানুয়ারি/মোআ)মন্তব্য করুন