বিএনপি কেন দ্রুত নির্বাচন চাইছে কারণ বললেন মির্জা ফখরুল

বিএনপি কেন দ্রুত নির্বাচন চাইছে তার কারণ বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেন, ‘নির্বাচন কেন চাইছি আমরা। একটি নির্বাচিত সরকার ছাড়া ম্যান্ডেড পাওয়া যায় না। সংস্কার করতে হলেও পার্লামেন্ট লাগবে। নির্বাচন যত দ্রুত হবে দেশের সংকট তত দ্রুত কাটবে। রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।’
রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সংস্কার শুরু করেছিলাম আরো দুই বছর আগে। আমরা গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলে ৩১ দফা দিয়েছি। সেখানে সব কিছু রয়েছে।’
জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব দয়া করে ওদিকে নজর দিন। দয়া করে সুশাসনের দিকে নজর দিন। এখন সরকারি যে আমলা কর্মকর্তা রয়েছে তাদের মধ্যে দুর্নীতি শুরু হয়ে গেছে। দয়া করে ওদিকে নজর দিন। যাতে সুশাসন দিতে পারে সেদিকে নজর দিন।’
আওয়ামী লীগ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্মম ইতিহাস হচ্ছে তাদের নেতার (শেখ মুজিব) ছবি-মূর্তি যেখানে ছিল দেশের মানুষ তা মুছে ফেলেছে।’
‘আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম সবার সামনে ভেসে আসছে। কারণ হচ্ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে চলে গিয়েছে। আমরা সব সময় বলি তাকে যতই মুছে দিতে চাও পারবে না, কারণ তার নাম মানুষের অন্তরে রয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব সময় বলি জিয়ার সৈনিক; জিয়াউর রহমানের সৈনিক তখনই হতে পারব যখন আমরা তাকে অনুসরণ করতে পারব। তার যে কর্ম জীবন, তার যে রাজনৈতিক চিন্তা সেটা যখন আমরা বাস্তবায়িত করতে পারব। সেটাই হবে তার সৈনিক হওয়ার উপযুক্ত কাজ। তার সবচেয়ে বড় জিনিস ছিল সততা, নিয়মানুবর্তিতা এবং কাজের প্রতি আন্তরিকতা আর দূরদৃষ্টি। সবগুলো মিলিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।’
‘শহীদ রাস্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সকলের কথা বলার অধিকার নিশ্চয়তা করেছিলেন। এই মিডিয়া তখন ছিল না। আওয়ামী লীগ বাকশাল সমস্ত পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। তিনি (জিয়াউর রহমান) এসে সমস্ত পত্র পত্রিকা খুলে দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘একটি কথাই বলতে চাই জিয়াউর রহমানকে অনুসরণ করলে আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারবো। তিনি যখন রাজনৈতিক দায়িত্বে ছিলেন চিন্তা করেছেন বাংলাদেশকে পরিবর্তন করতে হলে জনগণের পার্টিসিপেন্ট খুবই প্রয়োজন।’
‘আমাদের দায়িত্ব হবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে সততা সেই সততাকে যেন আমরা রক্ষা করি। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওকে বাস্তবায়ন করার জন্য সবাই সামনের দিকে এগিয়ে যাই।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানুষের কাছে যেতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় যেন সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে। আমরা যেন আমাদের রাজনীতি দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এমন একজন নেতা যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছেন এবং সম্মুখ যুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একজন সৈনিকের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছেন। যিনি একজন একজন বেজম্যান, সেনাপতি রাজনীতিবিদ।’
‘সেই মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি জাতিসত্তা দিয়েছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে। এত কিছুর সমাহার অন্য কোন নেতার মধ্যে দেখতে পায় না। আমার শুধু একজন বিশ্ব নেতার কথা মনে পড়ে তিনি হচ্ছেন জর্জ ওয়াশিংটন। আমেরিকার মুক্তি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি একজন বড় সংস্কারক।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিশিষ্ট কবি সাংবাদিক আব্দুল হাই সিকদারসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
(ঢাকাটাইমস/১৯জানুয়ারি/জেবি/ডিএম)

মন্তব্য করুন