ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্বদেশ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী প্রসূতির নাম শাবনুর আক্তার (২২)। তিনি কিশোরগঞ্জের মিটামইন উপজেলার আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্বদেশ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রাত ১০টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেহেদী ওই হাসপাতালে গিয়ে ঘটনা পরিদর্শন ও রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এসময় রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালে আসে। বর্তমানে প্রসূতি রোগী ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী শাবনুর আক্তারের বড় ভাই সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আমার ছোটবোন শাবনুর আক্তার প্রসূতি হিসেবে প্রসব বেদনা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় স্বদেশ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এসময় তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সন্ধ্যায় তাকে সিজার করলে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম নেয়। তারপর হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট থেকে জানতে পারি আমার বোনের জরায়ু কেটে ফেলা হয়। তার বোনের সিজার অপারেশন করেছে ডাক্তার মিশুতি রানী ঘোষ। এরপর ঘটনাটি আমি পুলিশকে অবহিত করি। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে আমার বোনকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। সেখানে এখন চিকিৎসা চলছে।’
এ বিষয়ে স্বদেশ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রসূতির সিজার করার পর জরায়ু সেলাই করার সময় বার বার ফুলে গেলে সেলাই করা যাচ্ছিল না।
হাসপাতালের সিজার অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. মিশুতি রানী ঘোষ বলেন, অপারেশন শেষে জরায়ুর মুখ সেলাই করার সময় বার বার ফুলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে রোগীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে তাকে বাঁচাতেই জরায়ু কেটে ফেলতে হয়।
এটা ভুল চিকিৎসা নয় বলে তিনি দাবি করেন।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মো. বুলবুল আহম্মদ জানান, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেহেদিকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে রোগী দেখে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করার পরামর্শ দেন। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে তিনি শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিন মিয়া জানান, খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে যায় রাত সাড়ে ৯ টায়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেন। রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
(ঢাকা টাইমস/২৪জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন