কারিকুলাম সংস্কার: আইসিটি ডিভিশনের সঙ্গে সমঝোতায় যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

উচ্চশিক্ষায় দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম সংস্কার এবং বেকারত্ব দূরীকরণে আইসিটি নির্ভর কর্মমুখী শিক্ষার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি ডিভিশন) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসকে আউটকাম বেজড এডুকেশন (ওবিই) এ পরিবর্তন করার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির নগর কার্যালয়ে ‘ইন্ট্রোডিউসিং ব্লেন্ডেড আইসিটি এডুকেশন ইন কারিকুলাম’ শিরোনামে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রাথমিক আলোচনা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে সেমিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পলিসি অ্যাডভাইজার (সমন্বয় ও সংস্কার) ফয়েজ আহমদ ত্যৈয়ব।
সেমিনারে নতুন সিলেবাসে আইসিটি কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর ভবিষ্যৎ রূপরেখা এবং বেকারত্ব নিরসনের প্রভাব সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলাতে শিক্ষার্থীদের আইসিটি শিক্ষার বাহিরে কোনো বিকল্প এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। যেখানে মান্ধাতার আমলের সিলেবাস দিয়ে বিগত দশকগুলোতে রাষ্ট্রযন্ত্র কেবল শিক্ষিত বেকার তৈরি করে এসেছে, যেখানে কর্মমুখী শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি না হওয়াটাই স্বাভাবিক।’
তিনি আরও বলেন, যেহেতু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার অভিভাবকত্ব করছে, সেহেতু তার প্রশাসন এবং তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। আর এজন্যই বেকারত্ব নিরসনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তিনির্ভর ও আধুনিক জ্ঞানসমৃদ্ধ শিক্ষার্থী তৈরি করতে এবং তাদের কর্মের নিশ্চয়তা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। আর এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকারের নীতিনির্ধারণী গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।’
উপাচার্য বলেন, কারিকুলাম এবং সিলেবাসগুলোকে অবশ্যই যৌক্তিক ও প্রায়োগিক হতে হবে যেন পাশ করে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষার্থীরা এর আউটকাম উপলব্ধি করতে পারে। তা না হলে কেবল সার্টিফিকেট নিয়ে পাস করে বেকারত্বের সমাধান করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।
সেমিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পলিসি অ্যাডভাইজার (সমন্বয় ও সংস্কার) ফয়েজ আহমদ ত্যৈয়ব বলেন, ‘প্রয়োজন অনুসারে ধারাবাহিক আইসিটি চর্চাকে মূল সিলেবাসের সঙ্গে সংমিশ্রন ঘটাতে হবে।’
এসময় বিভিন্ন লেভেল নির্ধারণ করে আইসিটি শিক্ষা প্রদানের ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সকল ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করার ও আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।
প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুই আধুনিকতার দিকে যাচ্ছে, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আইসিটি শিক্ষা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম জাফরুল আযম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ডিন ও রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক এবং এটুআই এর প্রতিনিধিবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/০৫ফেব্রুয়ারি/এমআর)

মন্তব্য করুন