বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা: নওফেল-রেজাউলসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

একজনের হাতের কব্জির রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার মদন মিয়ার ছেলে ভ্যানচালক মো. ইলিয়াছকে কুপিয়ে হাতের কব্জির রগ কেটে ফেলে।
এ সময় তার ওপর গুলি চালায় ও হাতবোমা-ককটেল নিক্ষেপ করার অভিযোগে নওফেল, করিম চৌধুরীসহ ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রবিবার বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে হামলা, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সাবেক মেয়রসহ ১২৭ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে মামলার আবেদন করেন একই থানার মধ্যম চাক্তাই এলাকার মদন মিয়ার ছেলে মো. ইলিয়াছ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা সংশ্লিষ্ট থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নগরের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আদালতের নির্দেশ মেনে মামলাটি রেকর্ড করেন। যদিও বিষয়টি জানাজানি হয়েছে আজ রবিবার।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রিজান চৌধুরীকে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এবং চসিক মেয়র ছাড়াও উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া, পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হারুন রশিদ হারুন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আকতার রুজি, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি প্রমুখ।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গেল বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে তিনি বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ মীর পেট্রোল পাম্পের সামনে বন্ধুরাসহ জড়ো হন। ওইদিন দুপুর থেকেই সেখানে অভিযুক্তরা কিরিচ, রামদা, লাঠিসোটা, দেশীয় ও বিদেশি অস্ত্রসহ নিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় মিছিল নিয়ে আসামিরা আন্দোলন বন্ধে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণ ও হাতবোমা-ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা রিজান পিকআপ চালক মো. ইলিয়াছকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিরিচ দিয়ে কোপ মারে। এ সময় তার কব্জির রগ কেটে যায়।
একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অন্য আসামিরা অবস্থান করছে জানতে পেরে তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।
পরে অবস্থার অবনতি হলে ফের ৬ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত চমেক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় সুস্থ হয়ে তিনি বাকলিয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন