রূপগঞ্জে জোর করে জমি ভরাট আবাসনের, বাধা দেওয়ায় উল্টো কৃষকদের হয়রানি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাবো ইউনিয়নের গুতুলিয়া এলাকায় পূর্বায়ন সিটি নামের একটি আবাসন প্রকল্পের লোকজন স্থানীয় কৃষকদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে বাধা দেওয়ায় কৃষকদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করে হয়রানি করছে ওই আবাসন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
জোর করে জমি ভরাটের প্রতিবাদে শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার মঠের ঘাট এলাকায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক কামরুল হাসান ওরফে রিপন মাস্টারসহ আরও অনেকে অভিযোগ করেন, গুতুলিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার জুয়েল, জাকারিয়া, পলাশসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি পূর্বায়ন সিটি আবাসন প্রকল্পের নামে রাতের আঁধারে কৃষকদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট শুরু করেন। কোনো ধরনের কেনাবেচা ছাড়াই ৮০ বিঘা জমি বালু ভরাটের দায়িত্ব নেন আলতাব হোসেন নামের এক প্রভাবশালী।
ভুক্তভোগীরা বলেন, বালুর পানিতে ইতিমধ্যে তলিয়ে গেছে অনেকের কৃষিজমি। কামরুল হাসান ওরফে মাস্টারের ৭ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। একই এলাকার মাসুম মোল্লার দুই বিঘা জমিতে বালু ভরাট করা হয়েছে। সজীব মিয়ার তিন বিঘা জমিতে রোপণ করা ফসল নষ্ট করা হয়েছে।
এ ছাড়া মিলন মিয়ার এক বিঘা, আনিস মিয়ার ৫ শতাংশ, আবু তাহেরের দেড় বিঘা, রেনু মিয়ার আড়াই বিঘা, আব্দুর রাজ্জাকের ৭ শতাংশ, তোফাজ্জল মোল্লার পৌনে তিন বিঘা, ফজর আলীর চল্লিশ শতাংশ, আনোয়ার আলী মোল্লার ৫৬ শতাংশসহ কৃষকদের জমিতে বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করা হয়েছে।
এদিকে, জোরপূর্বক কৃষকদের জমিতে বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করার প্রতিবাদ ও বাধা দেওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করছে ওই আবাসন প্রকল্পের লোকজন।
কৃষকদের জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাট ও ফসল নষ্ট করা থেকে বিরত না থাকলে স্থানীয় কৃষকরা সম্মিলিতভাবে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে পূর্বায়ন সিটি নামের আবাসন প্রকল্পের নিয়োজিত সাবেক মেম্বার জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করার পরেও তিনি রিসিভ করেননি।
জমিতে জোরপূর্বক বালু ভরাটের বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন কৃষকরা।
ইউএনও বলেন, ‘কৃষকদের অভিযোগ পেয়ে আমি ভোলাবো ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে ওই আবাসন প্রকল্পের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেই। এখন যদি আবারও তারা কার্যক্রম চালায় তাইলে আমি ব্যবস্থা নেব।’
(ঢাকাটাইমস/১মার্চ/মোআ)

মন্তব্য করুন