এই মুহূর্তে নির্বাচন হচ্ছে পুরো সংস্কার সম্পন্ন করার শান্তিপূর্ণ পথ: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নির্বাচন হচ্ছে এই মুহূর্তে জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের পুরো সংস্কার সম্পন্ন করার শান্তিপূর্ণ পথ; গণতান্ত্রিক পথ। সেই কারণে নির্বাচনটা সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য হয়ে গেছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশন ও আমাদের নতুন বাংলাদেশ কর্তৃক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আয়োজিত ‘দ্রুত বিচার সম্পন্ন, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন—এই তিনটাকেই আমাদের গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। কোনটাকে কম গুরুত্ব দিলে আমরা পথভ্রষ্ট হব। অনেকেই নির্বাচনকে একমাত্র গণতন্ত্র মনে করছেন। তারা বিচার এবং সংস্কারকে বাদ দিচ্ছেন, সেটা আমাদের ভুল পথে নিয়ে যাবে। আবার অনেকে বিচার এবং সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন—সেটা আমাদের একটা বিপদজনক খাদে নিয়ে যাবে। এই জায়গাটা আমাদের উপলব্ধি করা দরকার।
তিনি বলেন, সংস্কার আমাদের করতেই হবে। জাতীয় সনদ যেটা হবে, ঘোষণা হবে হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যে। কিন্তু অনেক বিষয়ে এখানে দ্বিমত আছে, আপত্তি আছে, নোট অব ডিসেন্ট আছে। আমাদেরই আছে—আমরা যেগুলোতে একমত হয়েছি, আরেক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। কিন্তু এটার মীমাংসার পথ কী? যারা বলছেন, এটা না হলে আমরা নির্বাচনে যাব না—এটা তো কোনো মীমাংসার পথ হতে পারে না। হ্যাঁ, তারা যদি মনে করেন যে ‘আমরা নির্বাচনে যাব না, আন্দোলন করে আমরা যা বলছি তাই করতে হবে’—সেটা তারা করতে পারেন।
"কিন্তু এই রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচনকে ঠেকানোর কোনো জায়গায় তারা যেতে পারেন না। নির্বাচন সুষ্ঠু করার দাবি তুলতে পারেন। কারণ, নির্বাচন হচ্ছে এই মুহূর্তে জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের পুরো সংস্কার সম্পন্ন করার শান্তিপূর্ণ পথ। গণতান্ত্রিক পথ। সেই কারণে নির্বাচনটা সংস্কার সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য হয়ে গেছে। কাজেই সংস্কার আমাদের করতেই হবে। কিন্তু সেই সংস্কারের জন্য নির্বাচন লাগবে, এবং সেটা সুষ্ঠু নির্বাচন—গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হবে।"
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই সনদের বিষয়ে আমরা অনেকগুলো বিষয়ে একমত পোষণ করেছি। তবে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রে প্রকৃত অর্থে যেই প্রত্যাশা ছিল, তার প্রতিফলন হয়নি। বরং সেখানে কিছু মনগড়া কথা যুক্ত করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট দলের ন্যারেটিভ তৈরি করার জন্য পুরনো ইতিহাস ও গতানুগতিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আড়াল রাখা হয়েছে, যা সনদের স্বচ্ছতা এবং সমন্বিত আহ্বানের মানসিকতার জন্য অনুকূল নয়।
নুর আরও বলেন, যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এসেছি, তার প্রতিটি অংশগ্রহণকারীর অবদান ও ভূমিকা রয়েছে। আমরা সেই কন্ট্রিবিউশনগুলোকে স্মরণ করি এবং সম্মান করি। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও সংহতি গড়ে উঠেছিল, তা ধরে রেখে আগামীতে সবাই মিলে একটি উন্নত ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব।
তিনি জাতীয় নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যেই নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে। আশা করা যায়, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে মডেল নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হবে। এতে দেশের মানুষের মুক্ত মতপ্রকাশের অধিকার সুরক্ষিত হবে এবং একটি শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল সরকার গঠন সম্ভব হবে।
অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তালুকদার জহিরুল হক তুহিনের সভাপতিত্বে এবং দানিসুর রহমান লিমন ও মাহিবা হক হিয়ার সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
(ঢাকাটাইমস/৮আগস্ট/জেবি)

মন্তব্য করুন