নির্বাচনী জোটে থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জোটগতভাবে নির্বাচন করলে নিজ দলের প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এমনই বিধান রেখে সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ সোমবার (১১ আগস্ট) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুলতবি সভাটি।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, সংসদ নির্বাচনে নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে জোটভুক্ত দলগুলোর প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
নতুন আরপিওতে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘তবে এই ক্ষমতা প্রার্থীর নির্বাচিত মেয়াদ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে।’
আরপিওতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, বিশেষ করে, পুলিশ ও প্রশাসনের বদলি তফসিল ঘোষণার ১৫ দিন পর পর্যন্ত ইসির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রেঞ্জের ডিআইজিদেরও আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রার্থীদের অনুদানের বিষয়ে আরপিওতে বলা হেয়েছে, দল ও প্রার্থী সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অনুদান নিতে পারবে। তবে তা ব্যাংকের মাধ্যমে নিতে হবে।
নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলাজনিত শাস্তিগুলো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ বলেন, তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্তের ফলাফল কমিশনকে জানাতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যক্তিগত এসিআরে তাঁর শাস্তির বিষয়টি সংরক্ষণ থাকবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের মিথ্যাচার বা অপবাদ ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার। বলেন, ‘এআই শুধু আমাদের দেশের সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। কমিশন সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজব রোধে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে, যেখানে ভালো তথ্যের মাধ্যমে খারাপ তথ্য দমন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, এটার মাধ্যমে এই প্রবণতাটাকে ঠেকাতে পারব।’
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন
নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহর তথ্যমতে, এবার ১৪৩টি নতুন দল থেকে আবেদন করেছিল। আবেদন করা কোনো দলই পুরোপুরি শর্ত পূরণ করতে পারেনি। পরে ৮৪টি দল তাদের ঘাটতি পূরণ করে ইসিতে জমা দেয়। এর মধ্যে ২২টি দল তাদের ঘাটতি তথ্য দিতে সামর্থ্য হয়েছে।
দলগুলো হলো: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), ফরোয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) সিপিবি (এম), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি ও নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/মোআ)

মন্তব্য করুন