মাদারীপুরে সংঘর্ষে এএসপিসহ ৫০ আহত, ১৪৪ ধারা জারি

মাদারীপুরের রাজৈরে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ (এএসপি) অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
রাজৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আজ দুপুর ১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এর আগে গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ব্যাপারীপাড়া মোড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যা ব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যৌথ প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষ চলার সময় অন্তত ৪০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিবদমান দুই গ্রামের ১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
এর আগে গত শনিবার রাতে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পুলিশের ৮ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন।
জানা যায়, ২ এপ্রিল আতসবাজি ফোটানো নিয়ে সংঘটিত বিবাদের জেরে গত শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় একপক্ষের অনিক নামের একজন রাজৈর বাজারে ধাওয়া দেন অপরপক্ষের জুনায়েদ ও তার বন্ধুরা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকটি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য আজ সোমবার সকাল ১০টায় সালিসে বসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই গতকাল সন্ধ্যায় দুই পক্ষের লোকজন আবার সংঘর্ষে জড়ায়।
সংঘর্ষের সময় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খানসহ পুলিশের ১১ সদস্য এবং বিবদমান দুই পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হন।
গুরুতর আহত পশ্চিম রাজৈর গ্রামের মেহেদী মীর (২২), রাসেল শেখ (২৮), সাহাপাড়ার মনোতোষ সাহা (৫০) ও আলমদস্তা গ্রামের মো. তোওফিককে (৩৭) রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য টহল দিচ্ছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/মোআ)

মন্তব্য করুন