ছাত্র-জনতা হত্যায় রসদ সরবরাহকারী আওয়ামী ক্যাডার সুলতান গ্রেপ্তার

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যায় রসদ সরবরাহকারী ও ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগ ক্যাডার মো. সুলতান উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার রাজধানীর মগবাজারের সুলতানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) । তার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ি থানায় ছাত্র-জনতা হত্যা মামলা রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হত্যা মামলাসহ একাধিক অভিযোগে বেশ কিছুদিন ধরে সুলতানকে খুঁজছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ধূর্ত সুলতান সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে গা ঢাকা দিয়ে চলছিল। বুধবার সকালে কোনো এক কাজে মগবাজারের তার সিএনজি বিক্রির অফিসে আসলে টের পান গোয়েন্দারা। সুলতানকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুলাই অভ্যত্থানে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে কার্যক্রম সম্পর্কে স্বীকার করেন সুলতান। এই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে পরে তাকে যাত্রাবাড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যার দায়ে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলার আসামি সুলতান। মামলায় ৪৬ নম্বর আসামি সে। মামলায় প্রথম আসামি পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এবং দ্বিতীয় আসামি আরেক স্বৈরাচার ওবায়দুল কাদের।
মো. সুলতান মগবাজার হাতিরঝিল এলাকায় আওয়ামী লীগের ক্যাডার। জুলাই অভ্যুত্থানে ইস্কাটন এলাকায় ছাত্র-জনতা হত্যায়ও তার দায় আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মগবাজারে তার সিএনজি চালিত অটোরিক্সার কার্যালয় ওই সময়ে ছত্র-জনতা দমনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মগবাজারে সুলতানের দোকান ছিল আওয়ামী লীগের টর্চারসেল।
সুলতান আওয়ামী লীগের আমলে বহু নিরীহ ও অসহায় মানুষকে অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছের লোক দাবি করে চালিয়েছে জবর দখল। ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের তৎকালীন কাউন্সিলরের ডান হাত বকে পরিচয় দিতো সুলতান। কাউন্সিলরকে সাথে নিয়ে বহু অনিয়মকে নিয়ম বানিয়েছে সে। এমনকি জবরদখল করে হাতিরঝিল এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধার জমিও দখল করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে সুলতানের বিরুদ্ধে। একই এলাকায় সরকারি জমি দখল করে বস্তি পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরেই উত্থান হয়েছে সুলতানের। সুলতান মূলত একজন সিএনজি চোর। বিগত সময়ে সিএনজি চুরি করে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরাও পরেছিলো সুলতান। পরে জামিনে এসে আবারো একই পেশায় জড়ায়। চুরির সিএনজি বিক্রির দোকান থেকে এখন শো রুম করেছে সুলতান। যেখানে অবৈধভাবে বিক্রি করছেন সিএনজি। আবার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া সিএনজিও গোপনে বিক্রি করে সুলতান এমন অভিযোগও রয়েছে।
সুলতানের বাড়ি ফরিদপুরে। সেই হিসেবে নিজেকে গোপালগঞ্জের লোক পরিচয় দিয়ে দেদারসে লুট তরাজ করেছে সুলতান। নিজেকে পরিচয় দিতো পলাতক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের লোক হিসেবে। বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাতের নির্বাচনে রাতের আধারে ব্যালটে সিল মারার কাজ করতো সুলতান। আর এর বিনিময় আওয়ামী লীগের পাওয়ার দেখিয়ে দেদারসে অনিয়ম করেছে সুলতান।
পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় ডিবি কার্যালয় থেকে যাত্রাবাড়ি থানায় সোপর্দ করা হয় সুলতানকে। শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/জেবি)

মন্তব্য করুন