যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা আঘাত চীনের, ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ

বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তালিকায় চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমস্ত পণ্য আমদানির ওপর ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে দেশটি।
শুক্রবার চীনের স্টেট কাউন্সিলের কাস্টমস ট্যারিফ কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চীনে আমদানি হওয়া সমস্ত মার্কিন পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে।
ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে একতরফা ‘গুন্ডামি’ বলে অভিহিত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং চীনের অধিকার ও স্বার্থের ক্ষতি করেছে’।
এদিকে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পাশাপাশি, বেইজিং ১৬টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের কাছে দ্বৈত-ব্যবহারের পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে এবং ১১টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে ‘অনির্ভরযোগ্য সত্তার তালিকায়’ যুক্ত করেছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, চীন সমস্ত বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ‘অতিরিক্ত শুল্ক’ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) একটি মামলা দায়ের করেছে। যেখানে ওয়াশিংটনকে অবিলম্বে শুল্ক প্রত্যাহার এবং তার বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে ‘ন্যায্য ও সমান সংলাপের’ মাধ্যমে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার বিকাল চারটায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টা) হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শুল্ক ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপে বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্কহার এক ধাক্কায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। এতদিন যা ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ, নতুন সিদ্ধান্তে তা ৩৭ শতাংশ করেছেন ট্রাম্প।
এছাড়া ভারতের পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের পণ্যের ওপর ২৯ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ৩৪ শতাংশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের পণ্যের ওপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে ৩০ শতাংশ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ শতাংশ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ শতাংশ, ফিলিপাইনের পণ্যে ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ, কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে।
অন্যান্য যেসব দেশের পণ্যের ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের পণ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কারের পণ্যের ওপর ৪৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
সূত্র: সিনহুয়া, আনাদোলু
(ঢাকাটাইমস/০৪এপ্রিল/এমআর)

মন্তব্য করুন