দাঁত ছাড়াই জন্মাচ্ছে আফ্রিকার হাতিরা!

Minhazul Islam
  প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ১০:০৩| আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ২২:৫৬
অ- অ+

মরা হাতির দাম লাখ টাকা। আর জ্যান্ত হাতির দাঁতের দাম কোটিতে গিয়ে ঠেকে মাঝে মাঝে। অথচ সেই হাতির এখন জন্ম হচ্ছে দাঁত ছাড়া। মানে হাতির নতুন একটা প্রজাতিই তৈরি হয়ে গেছে নতুন এ বিবর্তনের কারণে।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, দাঁতওয়ালা হাতির প্রজাতিটি পৃথিবীর কোন কোন জায়গা থেকে পুরোপুরি বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে আগামী দশকের পর। আর যে হাতিগুলো কোনভাবে বেঁচে আছে সেগুলোও বংশবিস্তার লাভ করছে কোন প্রকার দাঁত ছাড়াই...

ক্রমেই বাড়তে থাকা এসব অসংখ্য আফ্রিকান হাতি এখন দাঁত ছাড়াই জন্ম নিচ্ছে, এর একমাত্র কারণ সবচেয়ে সুন্দর দাঁতের হাতিগুলোকেই সবার আগে শিকার করে শিকারিরা। হাতির সুন্দর দাঁতই তার বিলুপ্তির সবেচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাড়াচ্ছ। যুগ যুগ ধরে সবচেয়ে সুন্দর দাঁতের হাতিগুলোকেই শিকার করার ফলে নতুন যে হাতির জন্ম হচ্ছে এরা দাঁতের দিক থেকে দূর্বল হাতির সন্তান।

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে আফ্রিকার কোথাও কোথাও শতকরা ৯৮ শতাংশ মেয়ে হাতিরই কোন দাঁত নেই। গবেষকরা বলছেন, আগে দেখা যেত দুই থেকে ছয় পার্সেন্ট হাতি দাঁত ছাড়া জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু এখন সংখ্যাটা রীতিমত ভয়ানক আকার ধারণ করেছে।

এশিয়ায় আইভরির চাহিদা মেটাতে গত দশ বছর ধরে শিকারিরা আফ্রিকার তিন ভাগের এক ভাগ হাতিকেই বেআইনিভাবে হত্যা করেছে। এতোকিছুর পরও এই দাঁতের এখনও খুব ভাল রকমের চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে এশিয়াতে।

২০০৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় এক লক্ষ চুয়াল্লিশ হাজারের মতো হাতিকে মেরে ফেলা হয়েছে বলেও প্রমাণ মিলেছে। যা এই প্রজাতিটিকে কোন কোন জায়গায় প্রায় বিলুপ্তির পথে নিয়ে গেছে। এদিকে গবেষকরা সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, আফ্রিকার যে হাতিগুলো এখনো কোনভাবে টিকে থাকতে পারছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এদের বংশধররা দাঁত ছাড়া জন্মাবে এশিয়ার হাতিগুলোর মতো।

‘চ্যারিটি অফ এলিফ্যান্ট ভয়েসেস’ হাতিদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান, সংস্থাটির প্রধানের নাম জয়েস পল, যিনি প্রায় তিন দশক ধরে এই প্রজাতিটির বিভিন্ন সমস্যাসমূহ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

যেসব হাতি প্রতিনিয়ত বেআইনিভাবে শিকার করা হচ্ছে এবং যেসব মেয়ে হাতি দাঁত ছাড়া জন্ম নিচ্ছে তাদের মধ্যে একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বলে ‘দ্যা টাইমস’ কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান জয়েস পল। মোজাম্বিকের ন্যাশনাল পার্কে, দেশটিতে চলা গৃহযুদ্ধের সময় অর্থাৎ ১৯৭৭ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি হাতিকে হত্যা করা হয়েছিল।

ডক্টর পল এর মতে, যেহেতু এইসব চোরাশিকারীরা নির্দিষ্টভাবে দাঁতওয়ালা হাতিগুলোকেই শিকার করতো এরফলে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী মেয়ে হাতিগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরই কোন দাঁত নাই! যদিও বেআইনি ভাবে এভাবে শিকার করাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে কিন্তু দাঁতহীন এই মেয়ে হাতিগুলোর জিন এর কারণে তাদের বাচ্চা হাতিগুলোও দাঁত ছাড়া জন্ম নিচ্ছে এবং এদের পরবর্তী প্রজন্মও এভাবেই অন্ম নেবে।

শুধু মোজাম্বিকেই গৃহ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর যত মেয়ে হাতিজন্ম নিয়েছে তার মধ্যে ত্রিশভাগই জন্মেছে দাঁত ছাড়া।

ঢাকাটাইমস/৩ডিসেম্বর/কেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
একই ঘটনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে মামলা: কার চাপে মামলা নিল খুলশী থানা?
সংস্কারের কথা সবার আগে আমরাই বলেছি: মির্জা ফখরুল
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় জনতা ব্যাংকে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস উদযাপন করল শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা