শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ হয় ধর্মীয় জ্ঞানে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৪:০৪ | প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:৫৭

মানুষ যত শিক্ষাই নিক না কেন, ধর্মীয় শিক্ষা না পেলে তা পূর্ণাঙ্গ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তার সরকার এই ধর্মীয় শিক্ষাকে ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। শিক্ষানীতিতেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সকালে রাজধানীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইমাম সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ইসলাম প্রচারে তিনি তার সরকারের নানা উদ্যোগ এবং চিন্তার বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একটি করে মসজিদভিত্তিক ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করা হবে। চালু করা হবে মসজিদভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা। জেলা পর্যায়ে চালু হবে আরবি শিক্ষা কার্যক্রম। আলেম-ওলামাদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল চালুর ঘোষণাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষাটাকে আরও সার্বজনীন করতে চাই, উন্নত করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষাটা পূর্ণাঙ্গ হবে তখনই যখন পার্থিব জগতের শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাটাও সবাই গ্রহণ করতে পারে, তখনই শিক্ষাটা পূর্ণাঙ্গ হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে শিক্ষানীতিমালা করেছি, সেখানে কিন্তু ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি।’

পবিত্র কোরআনকে ডিজিটাল করার উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ডিজিটাল যুগ, মানুষ বইও পরে প্রযুক্তির মাধ্যমে। এ জন্য পবিত্র কোরআন শরিফকে ইংরেজি, বাংলা এবং আরবি ভাষায় ডিজিটাল কোরআনে রূপান্তর করা হয়েছে। পৃথিবীর যে কোনা জায়গায় বসে এখন ল্যাপটপ, কম্পিউটার, আইপড বা মোবাইল ফোনে কোরআন শরিফ দেখতে পারবেন, পড়তে পারবেন।’

বাংলাদেশে দারুল আহকাম নামে মসজিদভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় একটি করে আরবি ভাষায় শিক্ষা কোর্স চালুও আমাদের বিবেচনায় আছে।’

সরকার ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন কম্পিউটার খুলে অনলাইনে গিয়ে অ্যাপ ইনস্টল করে আরবি ভাষা শিক্ষার সুযোগ যে কেউ নিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ যে আমরা গড়ে তুলছি, সেটা তারই দৃষ্টান্ত, তারই একটি নমুনা।’

যারা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কাজ করতে যেতে আগ্রহী তাদের জন্য নয়টি বিশেষ ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

উপজেলা পর্যায়ে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে একটি মডেল মসজিদ করে সেখান থেকে ইসলামিক জ্ঞান বিতরণের পরিকল্পনার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার মনে একটা ইচ্ছা আছে, সমস্ত উপজেলায় এবং জেলায় আমরা একটা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করবো। এখান থেকে ইসলামের সঠিক তথ্য এবং ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান মানুষ অর্জন করতে পারবে।’

ইতিমধ্যে এই মসজিদের পরিকল্পনা এবং নকশা করা হয়েছে জানিয়ে দ্রুত এসব মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সৌদি বাদশাহ সহযোগিতা করবে। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। এ জন্য জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে।’

এসব মসজিদ নির্মাণে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে সব সংসদ সদস্য ও প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মসজিদগুলোকে ইসলামিক জ্ঞানচর্চা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২৭ হাজার ৮৩২টি মসজিদ পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। ৩৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২১ হাজার ৭২০টি মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে।’

ইসলামপন্থীদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল

সরকার যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছে তার একটি আলেমদেরকে বরাদ্দ দিতে চায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যেন আয় বাড়ানো যায়, সে জন্য আলেম-ওলামাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এমন একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরির চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে। আমরা সারা বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। সেখানে কেউ যদি কোনো ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে চান বা কোনো কিছু করতে চান, সে জন্য সুযোগ দেয়া হবে।’

ইমাম মোয়াজ্জিনদের জন্য সরকার একটি ট্রাস্ট করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ট্রাস্টের সদস্যভুক্ত ইমামরা এখান থেকে ঋণ নিতে পারবেন এবং সেই ঋণটা হবে সুদমুক্ত।’

সরকারের হালাল খাদ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত করার চিন্তা আছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতে ইতিমধ্যে কিছু কিছু কাজ শুরু হয়েছে। আমরা সেটাকে সম্প্রসারিত করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক মুসলিম দেশ বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্য আমদানি করে। আমাদেরও সুযোগ আছে, আমাদের মাটি এত উর্বর, আমরা একটু চেষ্টা করলেই উৎপাদন বাড়াতে পারি এবং সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন দেশে পাঠাতে পারি।’

প্রতিষ্ঠানগুলোতে সত্যিকার অর্থে হালাল খাদ্য তৈরি হচ্ছে কি না-তা পর্যবেক্ষণে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিছু ব্যবস্থা নিতে পারে বলেও মনে করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, ‘এতে অনেক আলেম-ওলামার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতে পারে।’

ঢাকাটাইমস/০৯ফেব্রুয়ারি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

নেপালের জলবিদ্যুৎ কিনছে ভারত, অপেক্ষায় বাংলাদেশ

দেশের তাপমাত্রা মে মাসে রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা

হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে

রবিবার খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্লাস

থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

হাসিনা-থাভিসিন দ্বিপাক্ষীক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা স্বেচ্ছাচারিতামূলক: টিআইবি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

একযোগে আট বিভাগে সম্পন্ন হলো ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :