জিয়াউর রহমান কীভাবে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ হতে পারেন?

স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। দুঃখজনক হলেও এটা সত্য। যারা বিএনপি করেন, তারা বলেন, তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নাকি বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষক’! শুধু বিএনপি নয়, বাংলাদেশে এমন একটা মানুষের জাত দাঁড়িয়ে গেছে, যারা স্বাধীনতার ঘোষণা বিতর্ক বিষয়ে জানেন, কিন্তু কিছু বলেন না। এমনকি দল হিসেবে আওয়ামী লীগও এখন পর্যন্ত ভাষণ-বক্তৃতা ছাড়া এমন কিছু করেনি যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিতর্কমুক্ত থেকে ইতিহাস জানতে পারে।
এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। গত আট বছর ধরে ক্ষমতায়। এই নাতিদীর্ঘ সময়ে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। এর কৃতিত্ব অবশ্যই সরকার এবং জনগণের। কিন্তু ব্যর্থতাও আছে। এখন তো আওয়ামী লীগাররা গিজগিজ করছেন। নানা কারণে মানুষ এখন আওয়ামী লীগ করে। জামাতের লোকজনকেও আওয়ামী লীগ করতে দেখা যায়। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে না, যখন এত সুযোগ-সুবিধা থাকবেনা, বড় বড় প্রকল্পের পরিচালক হওয়া যাবে না, তখন কী হবে? দুর্নীতিগ্রস্ত ও সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগাররা তখন পালাবে। আওয়ামী পরিবারগুলোতেই তখন আওয়ামী লীগ বেঁচে থাকবে, বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
একদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সম্মান রক্ষা, অন্যদিকে ইতিহাস এর বিকৃতি রোধ। ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে। অথচ, এই সত্য ইতিহাসই আওয়ামী লীগ সঠিকভাবে কার্যকারিতার সাথে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে পারছে না। এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে ইতিহাস সঠিকভাবে এদেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছায়। যারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলেন, মূলত তাদের উদ্দেশ্যে আমার এই লেখা। তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখব। আশা করি তাদের কেউ এর উত্তর দিতে এগিয়ে আসবেন।
১৯৪৩ সালে ২৩ বছরের যুবক শেখ মুজিবুর রহমান যখন প্রাদেশিক মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য হয়েছিলেন, বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের শেখ মুজিব ও অন্যান্যরা যখন দলটিকে জনগণের দলে পরিণত করার চেষ্টা করছিলেন, তখন জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন?
১৯৪৭ সালে পূর্ববঙ্গ, আসামের কাছাড়, করিমগঞ্জ, সিলেট, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, কোলকাতা নিয়ে বাঙালিদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ’ নামেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করেছিলেন যুবক শেখ মুজিব, তখন এই জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন? পাকিস্তান আমলের শুরু থেকেই নানাবিধ রাষ্ট্রীয় অনাচার, অত্যাচারের প্রতিবাদে মাঝে মধ্যেই জেলে যাওয়া শুরু করলেন শেখ মুজিব, তখন এই জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন?
১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই যখন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এবং তমুদ্দন মজলিশ বাংলা ও উর্দু- দুই ভাষাকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করল তখন জিয়াউর রহমান সাহেব কোথায় ছিলেন? ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ‘বাংলা ভাষা দিবস’ পালন করতে গিয়ে শেখ মুজিব ঢাকার রাজপথে শত শত ছাত্র-জনতার সাথে পুলিশের সাথে সংগ্রাম করছিলেন, তখন জিয়াউর রহমান সাহেব কোথায় ছিলেন? ১১ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচদিন যখন শেখ মুজিব অন্যান্য ভাষা সংগ্রামীদের সাথে জেলখানায় ছিলেন, তখন জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন?
ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকার ঐতিহাসিক আমতলায় ১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ যখন শেখ মুজিব সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন তখন সামরিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন? ১৯ মার্চ জিন্নাহর ঢাকা সমাবেশে ছাত্রবিক্ষোভের সময়, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে, ১৯৬২ এর ছাত্র আন্দোলনের সময়, ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলনের সময়, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সরাসরি প্রক্রিয়া হিসেবে ইতিহাসে পরিচিত ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ সংশ্লিষ্ট ঘটনাপর্বের সময়, ১৯৭০ এর নির্বাচন এর সময়, ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর সময়, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ২৭ তারিখের সন্ধ্যার আগে জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন?
১৯৭১ এর মার্চের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার প্রশ্নে হার্ডলাইনে চলে যান। ১ মার্চ ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় পরিষদের বৈঠক স্থগিতের ঘোষণা দিলে বাংলাদেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বঙ্গবন্ধুর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদের জরুরি বৈঠকে ৩ মার্চ দেশব্যাপী হরতাল আহবান করা হয়। তখন জিয়াউর রহমান সাহেব কোথায় কী করছিলেন? যারা জিয়াউর রহমানকে হৃদয়ে ধারণ করেন তারা দয়া করে আমার এইসব প্রশ্নের জবাব দেবেন।
৭ মার্চের সেই ভাষণের সময় জিয়াউর রহমান সাহেব কোথায় ছিলেন? আমার জানতে ইচ্ছে করে। যখন রেসকোর্স ময়দানের লাখ লাখ মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি কথায় যখন গর্জন করে সায় দিচ্ছিল, তখন জিয়াউর রহমান কোথায় ছিলেন? প্রাথমিকভাবে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের এই কয়টা দিন শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র কাগজে কলমে স্বাধীন না হয়েও স্বাধীন রাষ্ট্রের মতই পরিচালিত হয়েছে।
২৫ মার্চ রাতে একদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির উপর হামলা চালিয়ে গণহত্যা শুরু করেছে অন্যদিকে ধানমন্ডি ৩২ নং বাসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দিন আহমদ ও অন্যান্যদের নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করছিলেন। ১২টা ২০ মিনিটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ইংরেজিতে লেখা সেই ঘোষণা পত্রে বঙ্গবন্ধু বলেন,
‘This may be my last message, from today Bangladesh is Independent. I call upon the people of Bangladesh wherever you might be and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved’.
(এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ, তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সৈন্য বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহবান জানাচ্ছি। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈনিকটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে’।)
বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণা বাংলাদেশের সর্বত্র ওয়্যারলেস, টেলিফোন ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রেরিত হয়। এই বার্তা প্রেরণের পরে বঙ্গবন্ধু আরেকটি লিখিত বার্তা সর্বত্র প্রেরণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু প্রেরিত দ্বিতীয় বার্তায় বলা হয়, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে, আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ, দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোনো আপস নাই। জয় আমাদের হবেই। পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক প্রিয় লোকদের কাছে এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুণ। জয় বাংলা’।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাত ১.৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নং বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যায় এবং এর তিন দিন পর তাঁকে বন্দী অবস্থায় পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।
২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনান। সে সময় একজন বাঙালি সেনা কর্মকর্তার প্রয়োজন পড়ে। জনতাকে বোঝানো যে, সেনাবাহিনীও যুদ্ধের সাথে সমানভাবেই আছে। শুরু হয় বাঙালি কোনো সামরিক কর্মকর্তার তালাশ। এ সময় জানা যায় একজন বাঙালি মেজর চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন, নাম জিয়াউর রহমান। তিনি সেখানে পাকিস্তানের অস্ত্রবোঝাই জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসকাজে তদারকি করছিলেন। ২৭ মার্চ, বিপ্লবী কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের সংগঠকরা মেজর জিয়াউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। তাঁরা জিয়াউর রহমানকে বুঝিয়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম লিডার বেলাল মোহাম্মদ।
সন্ধ্যায় বেতার প্রেরক যন্ত্র প্রস্তুত করা হয়। বিবৃতি পাঠকালে জিয়াউর রহমান তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নিজেকে প্রথম ‘প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে বলে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গেই ভুল বুঝতে পারেন তিনি। সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। সাথে সাথেই আরেকটি বিবৃতি তৈরি করা হয়। সেখানে জিয়াউর রহমান বলেন, “I, Major Zia, on behalf of our Great Leader, the Supreme Commander of Bangladesh, Sheikh Mujibur Rahman, do hereby proclaim the independence of Bangla Desh and (sic) that the government headed by Sheikh Mujibur Rahman has already been formed. It is further proclaimed that Sheikh Mujibur Rahman is the sole leader of the elected representatives of 75 million people of Bangla Desh and the government headed by him is the only legitimate government of the people of the independent sovereign state of Bangla Desh, which is legally and constitutionally formed and is worthy of being recognised by all the governments of the world. I, therefore, appeal on behalf of our Great Leader Sheikh Mujibur Rahman to the governments of all the democratic countries of the world, especially the Big Powers and the neighbouring countries, to recognise the legal government of Bangla Desh and take effective steps to stop immediately the awful genocide that has been carried on by the army of occupation from Pakistan. To dub us, the elected representatives of the majority of the people, as secessionists, is a cruel joke and should befool none.The guiding principle of the new state will be, first, neutrality; second, peace; third, friendship to all and enmity to none. May Allah help us.Joy Bangla” (দি ডেইলি স্টার, মার্চ ৮, ২০১৫)। আমি ইচ্ছে করেই আর বাংলা করতে গেলাম না। জিয়াউর রহমান কর্তৃক পাঠকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি তৈরি করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্র এবং পরের বিবৃতির আলোকেই। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে, বঙ্গবন্ধুকে সুপ্রিম কমান্ডার, মহান নেতা, বাংলাদেশের ৭৫ মিলিয়ন মানুষের ‘সোল লিডার’ আখ্যা দিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন। তিনি ঘোষণাপত্রের একজন পাঠক। এমএ হান্নানও তেমনি একজন পাঠক।
২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রটি ইপিআর, রাজারবাগ পুলিশলাইনের যারা ওয়্যারলেস এ পাঠ করেছেন, তারাও পাঠক। তাহলে কী জন্য, কী কারণে, কিসের ভিত্তিতে জিয়াউর রহমানকে আপনারা ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ বলে দাবি করেন। আপনাদের আসল উদ্দেশ্য কী? জিয়াউর রহমানকে সম্মানিত করতে গিয়ে মিথ্যাচার করার কোনো মানে হয় না। এতে জিয়াউর রহমান দিন দিন ছোটই হবেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে তিনি তুলনীয় নন।
জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এগুলো যারা অস্বীকার করে তাদেরকেও সমাজ ভালো চোখে দেখে না। মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমান এর কোনো ভূমিকাই ছিল না, এমন কথা যারা বলেন, তাদেরও আমরা নিন্দা করি। কেউ যদি জিয়াউর রহমানকে আদর্শ মনে করেন, করতে পারেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সাথে স্বাধীনতার ইতিহাস ভাগাভাগি করার মত যোগ্য মানুষ তিনি নন।
বিএনপির কাছে অনুরোধ থাকবে, বঙ্গবন্ধুর সাথে তুলনা করা বন্ধ করুন। ইতিহাস নতুন করে কেউ লিখতে পারেনা। ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করা যায়, কিন্তু সফল হওয়া যায় না। স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পূর্ণ একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া আর ইখতিয়ার এর বিষয়। হুট করে কেউ এই ঘোষণা দিতে পারেন না। অনেকদিনের ত্যাগ তিতিক্ষা, আন্দোলন সংগ্রাম এর মধ্য দিয়ে একজন মহান নেতা এই ঘোষণা দিতে পারেন। তাই ইতিহাসে যার যততুকু অবদান তার সঠিক মূল্যায়ন করলেই কেবল ইতিহাস আমাদের দুহাত ভরে দেবে। নতুবা আমরা অযথা বিতর্কে ডুবে নিজেদের হারিয়ে ফেলব।
লেখকঃ সহকারী অধ্যাপক, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ৃ

মন্তব্য করুন