সোনারগাঁয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১০

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ জুলাই ২০১৭, ২৩:১১
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাদা পোশাকে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর সময় এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় অভিযানে যাওয়া এএসআইয়ের ব্যবহৃত অস্ত্রটি লুট করার দুই ঘণ্টা পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে সেটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের এক এএসআই, এক কনস্টেবল ও ইউপি সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

শনিবার দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের বেলপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, শনিবার দুপুরে সোনারগাঁ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক ইমাম আহাদ ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম সাদা পোশাকে পুলিশের সোর্স রনি মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সাদিপুর ইউনিয়নের কাজহরদি দেলপাড়া গ্রামে মাদকবিক্রেতা বাবুল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশ এ সময় ৫ কেজি গাঁজাসহ বাবুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে বাবুলকে ছাড়িয়ে নিতে তার পরিবারের লোকজন সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যদের উপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়াডের্র সদস্য (ইউপি মেম্বার) আশরাফ আলী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পুলিশ এ সময় সামাদ নামে এক নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে। এ সময় সাদিপুর ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ উদ্দিন পুলিশের হাতে আটক সামাদকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ জানান। এ নিয়ে ইউপি সদস্য ও পুলিশ সদস্যদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় পুলিশ ওই ইউপি সদস্যকে ধাক্কা দিলে মাটিতে পড়ে গিয়ে আহত হন। এতে করে স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

এ সময় এলাকাবাসী এএসআই ইমাম আহাদ, কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম ও সোর্স রনি মিয়াকে মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং এএসআইয়ের সঙ্গে থাকা অস্ত্র লুট করে নেয়। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর হাত থেকে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। এতে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই ইমাম আহাদ, কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য আশরাফ আলীসহ ১০ জন আহত হন।

পরে দুপুর দেড়টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লার সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-খ) সাজিদুর রহমান, ওসি মঞ্জুর কাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে এবং খোয়া যাওয়া অস্ত্রটি উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক ইমাম আহাদ বলেন, মাদকবিক্রেতা বাবুলকে গ্রেপ্তার করে ফেরার পথে তার ছেলে-মেয়ে ও তার লোকজন আমাকে ও কনস্টেবলকে মারধর করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। এসময় বাবুলের লোকজনের ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে ইউপি সদস্য আশরাফ আলী পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে আহত হয়। তার রক্ত দেখে আমি তাকে মারধর করেছি বুঝে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে।

সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম মঞ্জুর কাদের জানান, পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর সময় পুলিশের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়েছে। অভিযানে ৫ কেজি মাদকসহ এক মাদকবিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনরা এসে মাদকবিক্রেতাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছুটে আসলে পুলিশ তাকে ধাক্কা দেয়। এতে ইউপি সদস্যের মাথা ফেটে যায়। ইউপি সদস্যের চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসে। এ সময় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে।

তিনি জানান, পুলিশের অস্ত্রটিও লুট করে নিয়েছিল। পরে আমরা গিয়ে অস্ত্রটি উদ্ধার করেছি।

(ঢাকাটাইমস/১জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :