বাহুবলে ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আর মাত্র তিনদিন বাকি। শেষ মুহূর্তে এসেও প্রচারণা জমেনি। হাট-বাজারকেন্দ্রিক এ প্রচারণা সীমাবদ্ধ থাকায় তৃণমূল ভোটারদের মাঝে এ উপ-নির্বাচনকে ঘিরে তেমন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। তবে সচেতন মহলে জয়-পরাজয়ের হিসাব চলছে ঠিকই। কেউ আওয়ামী লীগকে, কেউ বিএনপি, আবার কেউ বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন। তবে লড়াই হবে ত্রিমুখী এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই অধিকাংশেরই। এ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী ৪ নভেম্বর এ উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৬১ কেন্দ্রে ১ লাখ ২৪ হাজার ১২০ জন ভোটার ভোট দেবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন সাকিব প্রবাসে গমন করায় সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শেখ ফিরোজ মিয়ার আবেদনে পদটি শূন্য করে কর্তৃপক্ষ।
যথারীতি শূন্যপদে নির্বাচন কমিশন গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আগামী ৪ নভেম্বর এ উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে। এ উপ-নির্বাচনে মো. তারা মিয়া (নৌকা) মো. চান মিয়া (ধানের শীষ), ডা. রমিজ আলী (আম) ও মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া (তালা) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জানা গেছে, বাহুবল উপজেলায় চা শ্রমিক ও মৎস্যজীবীদের পৃথক দুটি ঐক্যবদ্ধ সম্প্রদায় রয়েছে। চা শ্রমিকরা যেমন প্রার্থী না দেখে ভোট দেয় নৌকা প্রতীকে, তেমনি মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ভোটারাও প্রতীক না দেখে ভোট দেয় নিজ সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে। ফলে ভোটের মাঠে এ দুই সম্প্রদায়ের কদর অনেক বেশি।
স্থানীয় লোকজনের সাথে আলোচনা ও ভোটার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ দুই সম্প্রদায়ে ভোটারের হার যথাক্রমে ৯ ও ১১ ভাগ। চা শ্রমিক সম্প্রদায়কে পূঁজি ধরে এখানে আওয়ামী লীগের ভিত্তি মজবুত বিবেচনায় তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে এককভাবে শক্তিশালী প্রার্থী বিবেচনা করা হয়। যুবলীগ নেতা মো. তারা মিয়াকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করে আওয়ামী লীগ। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংককে টক্কর দিতে বিএনপিও প্রার্থী মনোনয়নে কৌশল অবলম্বন করে। তারা মৎস্যজীবী সম্প্রদায় থেকে মো. চান মিয়াকে (সাবেক ইউপি মেম্বার) মনোনীত করে।
এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রমিজ আলী (সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান) এনপিপির মনোনীত (আম) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া (সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান) (তালা) স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে আওয়ামী লীগ।
প্রচারণা শুরু হলে সাম্প্রদায়িক ভোট ব্যাংককে পূঁজি করে মো. চান মিয়া আলোচনায় উঠে আসলে বিএনপি নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামে।
পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগও মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির একাংশকে মাঠে নামায়। উভয় প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দ প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
অপর দিকে, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিতি, ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজ ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে পূঁজি করে প্রচারণার মাঠে ভাল অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া।
এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. তারা মিয়া, বিএনপি প্রার্থী মো. চান মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ ফিরোজ মিয়ার মাঝে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলেই স্থানীয় লোকজন ধারণা করছেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৪ অক্টোবর বাহুবল উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনষ্ঠিত হবে।
(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)