‘নারী ক্ষমতায়নের প্রতিফলন রাজনীতিতে অংশগ্রহণ’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নের অন্যতম প্রতিফলন হচ্ছে রাজনীতিতে পুরুষের মতোই সমানভাবে অংশগ্রহণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্তকরণের জন্য এবং রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে সমস্যা দূরীকরণে জাতীয় সংসদে নারীদের সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশের বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী নারী এবং জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও স্পিকারও নারী উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ কারণে বাংলাদেশকে এখন নারীর ক্ষমতায়নের মডেল হিসেবে উল্লেখ করা যায়।
মঙ্গলবার সিরডাপ মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘দক্ষিণ এশীয় নারীদের আঞ্চলিক সম্মেলনে’র সমাপনী দিনে ‘দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনের আয়োজক এনজিও সংস্থা আনন্দ’র চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসেন।
রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে আরও আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক তথ্য কমিশনার ড. সাদেকা হালিম, নারী প্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইষাণী চক্রবর্তী।
সেমিনারে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকার নারী সংসদ সদস্য ও নেতারা অংশগ্রহণ করেন।
মন্ত্রী মায়া বলেন, বাংলাদশের বর্তমান রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের যে চিত্র-এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষের সমান হবে। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়েছে। সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি নারীদের সরাসরি নির্বাচনেরও সুযোগ রয়েছে। গত ১০তম সংসদ নির্বাচনে ১৭ জন নারী সাংসদ সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে তৃণমূলের নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার আওতায় ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের জন্য তিনটি সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ৩৩% নারী এখন প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, নারীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীরা যাতে এর মাধ্যমে নারী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
মায়া আরও বলেন, নারীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন, সংশোধন ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নারীরা তখনই রাখতে পারবে, যখন রাজনীতিতে তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, নারীদের ওপর যেসব বৈষম্য এবং সহিংসতা সংঘটিত হয়, সেগুলো দূরীকরণের মধ্য দিয়ে নারীরাও যেন সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে শামিল হতে পারে সে লক্ষ্যে সরকার নারী সদস্যদের আলাদা করে বরাদ্দ দিচ্ছে। এছাড়া নারীর উন্নয়নের স্বার্থে সরকার সিডোও, বেইজিং প্লাটফর্ম ফর অ্যাকশনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং তা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৬নভেম্বর/জেবি)

মন্তব্য করুন