ভেসে গেল জাহাঙ্গীরের সাড়ে চার কোটি টাকা

আবু হাসিব খান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:১৩| আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:১৬
অ- অ+

উজানের পানিতে সৃষ্ট বন্যায় মুছে গেছে হবিগঞ্জের প্রবাসফেরত এক মৎস্য খামারির স্বপ্ন। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে তার প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার মাছ। জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এই ক্ষতিগ্রস্ত খামারি এখন পাগলপ্রায়।

বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের পূর্ব-বাজুকা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে ফিরে প্রায় ১৩ একর সরকারি জমি লিজ নেন। ওই জমির পাশে নিজের জমিসহ সব মিলিয়ে ৪০০ বিঘা জমিতে ‘জুবেদা-গনি এগ্রোপার্ক অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামে মৎস্য খামার গড়ে তোলেন তিনি। সেখানে কাজ করতেন ৪০ জন শ্রমিক।

কোটি টাকার ওপর ব্যয় করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন ওই খামারে। এরপর তার পাশে আরো প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে আরেকটি খামার করেন জাহাঙ্গীর। তাতে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করেন ২০ লাখ টাকার। এর মধ্যে মাছের খাদ্যসহ আছে নানা খরচ।

দুই খামারের মাছ আসছে জ্যৈষ্ঠ মাসে বিক্রি করার কথা ছিল। তাতে সাড়ে চার থেকে ৫ কোটি টাকা লাভ হতো। মাছ তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জাহাঙ্গীর। এরই মধ্যে হানা দেয় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। ভাসিয়ে নেয় খামারের সব মাছ।

মাছ রক্ষায় জাহাঙ্গীর চেষ্টাও কম করেননি। প্রাথমিকভাবে খামারের চারপাশে জাল ও পাটিবাঁধ দিয়ে মাছ আটকানোর চেষ্টা করেন। এসব উপকরণ আর শ্রমিক খরচসহ খরচ হয়ে যায় প্রায় লাখ টাকা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পানির তোড়ে পাটিবাঁধ ভেঙে যায়। ভেসে যায় জাহাঙ্গীরের কোটি কোটি টাকার মাছ।

জাহাঙ্গীরের খামারের চারপাশে এখন শুধু পানির বিস্তার। সেখানে নেই মাছের লাফালাফি কিংবা পানির সমতলে ঠোঁট ভাসিয়ে মাছের ঝাঁকের ছবি।

সব হারিয়ে খামার মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন এখন হাহাকার করছেন। এ ক্ষতি কীভাবে কাটাবেন ভেবে পাচ্ছেন না তিনি। ঢাকাটাইমসকে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে এসে কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে খামার করেছিলাম। ৪০ জন শ্রমিক নিয়ে পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছিলাম খামার। সব সঞ্চয় বিনিয়োগ করেছিলাম এখানে। আশা ছিল জ্যৈষ্ঠ মাসে মাছ বিক্রি হলে কয়েক কোটি টাকা আয় হবে। কিন্তু বন্যায় আমার সব স্বপ্ন ভাসিয়ে নিয়েছে।’

পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন অসহায় দিন কাটছে জাহাঙ্গীরের। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, এই বন্যায় যারা সহায়-সম্বল হারিয়েছে তাদের দিকে যেন নজর দেয় সরকার।

স্থানীয় ইউপির ওয়ার্ড সদস্য ফজলুর রহমান জানান, জাহাঙ্গীর হোসেন দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে এসে ৪০-৫০ জন লোক নিয়ে কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ করে মাছের খামার গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু অকাল বন্যা তার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।

হাওরাঞ্চলের চলমান বন্যায় সরকারি হিসেবে সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভবিাজারের সাড়ে আট লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডুবেছে দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল।

ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/প্রতিনিধি/ইএস/মোআ

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঋণের টাকার চাপে গৃহবধূর আত্মহত্যা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগে বিএনপির নতুন প্রস্তাব
খুলনায় যৌথ অভিযানে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাসহ আটক ১
বিএনপির বিরুদ্ধে চিহ্নিত গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে: ড্যাব
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা