শাহজালালে আমদানিনিষিদ্ধ দুটি অস্ত্র আটক
হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এয়ার কার্গো থেকে আমদানিনিষিদ্ধ দুইটি ওয়ালথার পিপি (৭.৬৫ এমএম) মডেলের পিস্তল আটক করেছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।
রবিবার শুল্ক গোয়েন্দা সদস্যরা বিমানবন্দরের এয়ার কার্গো ইউনিটের ১ নম্বর স্ট্রং রুমে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রগুলো পরীক্ষা করে অস্ত্র দুইটি আটক করেন।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, একই চালানে আসা আরও ৫৬টি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, যা খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। ১১ জুলাই সংশ্লিষ্ট সবার উপস্থিতিতে বাকি অস্ত্রগুলো পরীক্ষা করা হবে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কাস্টমস নেটওয়ার্কসগুলোর মধ্যে ৩ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ দিনব্যাপী ‘অপারেশন আইরিন-২’ পরিচালিত হচ্ছে। এবারের থিম হচ্ছে ‘রেগুলার অপারেশন টার্গেটিং অ্যান্ড কাউন্টারিং ট্রাফিকিং ইন স্মল আর্মস অ্যান্ড লাইট উইপনস’। এরই অংশ হিসেবে আজকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। বাংলাদেশসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২২টি দেশ এ অভিযানে অংশ নিচ্ছে। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর এ অভিযানের লিয়াজোঁ অফিস হিসেবে কাজ করছে।
ওই সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন, ইতালি থেকে আসা অস্ত্রের এই চালানটিতে আমদানিনিষিদ্ধ পুরোনো ও ব্যবহৃত অস্ত্র আমদানি করা হলেও এটি সুকৌশলে খালাস নেয়া হবে। এররপর শুল্ক গোয়েন্দার এয়ারফ্রেইট দল, কাস্টমস হাউস ঢাকার প্রতিনিধি, র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা অভিযান পরিচালনা করেন। পরে কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায়, চালানটির আমদানিকারক ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানি, ৬৫, বায়তুল মোকাররম, ঢাকা এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এম এম ট্রেডার্স, ৩১৯/১, পূর্ব রায়েরবাজার, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। চালানে আসা প্রতিটি পিস্তলের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৯০ ইউরো। এই মূল্যের ওপর ২৮৯.২১ শতাংশ শুল্ক ও কর প্রযোজ্য।
বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র আমদানিনীতি আদেশ ২০১৫-২০১৮ অনুযায়ী, রিভলবার ও পিস্তলসহ সব পণ্য অনুমোদিত ডিলার কর্তৃক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতিক্রমে আমদানিযোগ্য। একই আদেশের ‘আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা’-এর ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, সেকেন্ডারি বা সাব স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি বা নিম্নমানের পণ্য অথবা পুরোনো, ব্যবহৃত, পুনঃসংস্কার (রিকন্ডিশন্ড) পণ্য অথবা কারখানায় বাতিল করা বা জব লট ও স্টক লটের পণ্য আমদানিনিষিদ্ধ।
আমদানিকারকের ঘোষণা অনুযায়ী, এগুলো নতুন অস্ত্র হিসেবে আমদানি করা হলেও শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃক পুনঃপরীক্ষায় এগুলো পুরোনো, ব্যবহৃত ও অকার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া পিস্তল দুইটির মূল বডি, হাতল, ব্যারেল ও স্লাইডে মুদ্রিত নম্বরের মধ্যে ভিন্নতা লক্ষ করা যায় এবং নম্বরগুলো সাজানো নয় বলেও দেখা যায়।
আমদানিনিষিদ্ধ এসব আগ্নেয়াস্ত্র আনার রহস্য উদ্ঘাটন করে দেখবে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। একই অস্ত্রের বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন সিরিয়াল নম্বর থাকার বিষয়টি সন্দেহজনক হিসেবে দেখছে তারা।
জানেতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানিয়েছেন এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/এএ/জেবি)