গাইবান্ধায় নতুন করে ১২ গ্রাম প্লাবিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট ২০১৭, ১৯:১৬

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের সালাইপুর গ্রামের ঘাঘট নদীর বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১২টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুর ও মৎস্য চাষ প্রকল্পের মাছ। তলিয়ে গেছে আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও শাকসবজির ক্ষেত। পানি এসে চাপ পড়ছে গাইবান্ধা-সাদুল্লাপুর সড়কে।

ইতোমধ্যে সদর উপজেলার বল্লমঝাঁড় ইউনিয়নের কাজলঢোপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নতুন গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন সালাইপুর গ্রাম। ঘাঘট নদীর কাজলঢোপ ফোরকানিয়া গ্রাম থেকে বাঁধের উপর দিয়ে এই গ্রামে যেতে হয়। বাঁধটির প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অসংখ্য স্থানে ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। তিন বছর আগে ঘাঘট নদীর প্রবল পানির চাপে বাঁধটির ৫০ ফুট অংশ ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা ব্যক্তিগতভাবে নির্মিত বাঁশের খুঁটির উপর দিয়ে সেই থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

বাঁধের ভাঙা ওই অংশটি দিয়ে বুধবার রাত থেকে পানি ঢুকে ইতোমধ্যে বনগ্রাম ইউনিয়নের সালাইপুর, মন্দুয়ার, দক্ষিণ মন্দুয়ার, গড়ের মাঠ, জয়েনপুর, বল্লমঝাঁড় ইউনিয়নের বড় গয়েশপুর, চক গয়েশপুর, কাজলঢোপ গ্রামের স্কুল, রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবছর বন্যায় ভেঙে যাওয়া এই অংশ দিয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ও সদর উপজেলার বল্লমঝাঁড় ইউনিয়নের ২০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া বন্যার এই পানি এসে চাপ পড়ে গাইবান্ধা-সাদুল্লাপুর প্রধান সড়কের উপর। বন্যায় প্লাবিত হয়ে আশেপাশের ৫টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ থাকে।

সালাইপুর গ্রামের মফিজল হক বলেন, তিনবছর আগে পানির চাপে সালাইপুর গ্রামের ঘাঘট নদীর প্রায় ৫০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে এই পথে চলাচলকারী প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে অসহনীয় কষ্ট পেতে হচ্ছে। বাঁধটি মেরামত না করায় আবারও বন্যার পানি ঢুকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। অনেক বাড়ির আঙ্গিনায় ও ঘরে এক হাটু করে পানি উঠেছে।

বড় গয়েশপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান বলেন, সামান্য কিছু জায়গা মেরামত না করার ফলে আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবছর নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় আমার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ফলে আমি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন সরকার ঢাকাটাইমসকে মুঠোফোনে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার তাগাদা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই প্লাবিত হয়ে পড়ে বনগ্রাম ইউনিয়নের প্রায় ১২টি গ্রাম।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমসকে মুঠোফোনে বলেন, যেটা ভাঙা আছে, সেটা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি না। নতুন করে যাতে কোন বাঁধ না ভাঙে সেটা নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছি। প্রয়োজনে পরে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘাগট নদীর পানি ঢুকে নতুন করে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে শুনেছি। কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলেও জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :