স্কুলে স্কুলে রণাঙ্গনের কাহিনি বলছেন মুক্তিযোদ্ধারা

মহিউদ্দিন মাহী, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:৪৮ | প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:৪৩

আসমা বেগম। পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউ জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এবারের বিজয় দিবস উপলক্ষে গতানুগতিক অনুষ্ঠান হবে-এমন ধারণাই ছিল তার। কিন্তু স্কুলে গিয়ে দেখতে পেল যে অন্য রহম আয়োজন। একজন সফেদ দাড়িওয়ালা মানুষ তাদের সামনে আসলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেয়া এই মানুষটি তার সেই দিনের গল্প বলছেন।

আসমার তো আনন্দের শেষ নেই। সে বাবা-মায়ের কাছে ছোট ছোট কিছু মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলেও এভাবে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এমনভাবে কাছে পাননি কখনও।

আসমার মতো এমন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে নাজিরপুর উপজেলার কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। বিজয় দিবসে বিজয়ের গল্প রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদে;র মুখ থেকে শোনাতে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে’ নামে ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে নাজিরপুর উপজেলা প্রশাসন।

প্রাথমিকভাবে ২১ টি স্কুলে দুইদিনব্যাপী এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়। আজ বুধবার প্রথম দিনে ১৬টি স্কুলে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিন ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ১৬টি স্কুলে গিয়ে তাদের রণাঙ্গণের গল্প শিক্ষার্থীদের শুনান। আর আগামীকাল ৫টি স্কুলে এই কর্মসূচি উদযাপিত হবে। এই অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে দশ্রীরামকাঠী ইউ জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে গল্প বলেছেন উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ কমান্ড কাউন্সিলের সহকারী কমান্ডার কাজী মোসলেম উদ্দিন। ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজমুল আলম।

এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সম্পর্কে ইউএনও নাজমুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিজয় দিবসে সাধারণত আমরা গতানুগতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকি। কিন্তু এবার আমি চিন্তা করেছি ব্যতিক্রম কিছু করা যায় কি না। এমন চিন্তা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের গল্প প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের চিন্তা আসল। এর ফলে একজন শিশু শিক্ষার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে শুনতে পারছেন। এতে করে ওই শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যেমন লাইভলি শুনছে, তেমনি সে এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তারা এই গল্প অন্যদের কাছে ছড়িয়ে দেবে। এভাবে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠবে। নতুন প্রজন্ম আমাদের বিজয় গাঁথা এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সুন্দরভাবে জানতে পারবে।’

ইউএনও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো যদি শিশুরা সরাসরি একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে সরাসরি শুনে তাহলে বাচ্চারা আরও বেশি মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অনুপ্রাণিত হবে। এটি সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়বে।

স্থানীয়রা জানান, এমন কর্মসূচিতে উপজেলার অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরাও বেশ উল্লাসিত। তারাও তাদের স্কুলে এমন কর্মসূচি পালনের দাবি জানান। তাদের ভাষ্য, এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ যেন উপজেরার সব স্কুলে চালু করা হয়। এতে করে শিক্ষার্থীরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং গল্প সরাসরি একজন মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে শুনে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হতে পারবে।

শফিকুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষক বলেন, উপজেলা প্রশাসন এবার বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রম আয়োজন চালু করেছে। এতে শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দিত হচ্ছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক বিষয় সরাসরি মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে শুনতে পারছেন এবং কোনো প্রশ্ন থাকলে তারা সেটিরও উত্তর জানার চেষ্টা করছে। সত্যিই এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

প্রাথমিকভাবে চালু হওয়া ২১ টি স্কুলের মধ্যে আটটি প্রাথমিক প্রাইমেরি স্কুল, দুইটি মাদ্রাসা ও ১১টি মাধ্যমিক স্কুল।

(ঢাকাটাইমস/১৩ডিসেম্বর/এমএম/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ঝড়ের আশঙ্কায় সিলেট অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেত

পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে: পরিবেশমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইসির মনিটরিং টিম

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে: এডিবির আবাসিক প্রধান

থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন শিক্ষামন্ত্রী

উপজেলা নির্বাচনে প্রতি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬ সশস্ত্র সদস্য থাকবে: স্বরাষ্ট্রসচিব

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন মানসম্মত তথ্য ও সমন্বিত উদ্যোগ

তীব্র গরমে ট্রেনযাত্রীদের শরবত দিলো রেলওয়ে

​​​​​​​দলীয় ও সরকারপ্রধানের নির্দেশনা অমান্য করায় বিস্মিত ইসি আহসান হাবিব

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :