সিরাজুল আলম খান ষড়যন্ত্রকারী: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ মার্চ ২০১৮, ২২:২০| আপডেট : ১০ মার্চ ২০১৮, ১৭:৫৯
অ- অ+

বাংলাদেশের রাজনীতিতে রহস্য পুরুষ হিসেবে পরিচিত জাসদের ‘গুরু’ সিরাজুল আলম খান সব সময় ‘ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ছিলেন’ বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ নিয়ে শুক্রবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাবেক ছা্ত্রলীগে নেতা এবং পরে জাসদের গুরুর প্রসঙ্গটি আনেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিরাজুল আলম খানের কথা শুনলে হাজার হাজার প্রাণ ঝরত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা জানান, বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিতে মঞ্চে উঠার সময় সিরাজুল আলম খান ও তার ‘সাঙ্গপাঙ্গরা’ বঙ্গবন্ধুকে বলেন, ‘লিডার, আজকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন আব্বা শুধু একটা কথাই বলেছিলেন, কী করতে হবে, তা আমি ভালো জানি। লেট দ্যা লিডার লিড। অর্থাৎ নেতাই জনতাকে বলবে কী করতে হবে।... তোমরা প্রস্তুত থাক, আমি জানি কী করতে হবে।’

সেদিনের ভাষণে বঙ্গবন্ধু পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার কথাই জানিয়েছিলেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্যে মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার বার্তা দিয়েছেন।

‘যারা মুক্তিকামী তারা কিন্তু বার্তাটা পেয়ে গেছেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা কিন্তু তারা বুঝে উঠতে পারেনি।’

সেদিন সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে কী হতো সেটিও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘পাকিস্তানিরা রেডি, তারা হেলিকপ্টারে বোমা নিয়ে রেডি। যে মুহূর্তে ঘোষণা দেবে, তখন তারা ব্রাশ ফায়ার করবে, বোমা মেরে যত পারে, মানুষ হত্যা করবে।’

জনসভা শেষে এতে অংশগ্রহণকারীরা মিছিল নিয়ে বাড়ি ফিরে নিয়ে গিয়েছিল এবং তাদের কারণে শেখ হাসিনার বাড়ি ফিরতে দেরি হয় বলেও জানান তিনি।

জানান, বাড়িতে গিয়েও তিনি দেখেন সিরাজুল আলম খান সেখানে উপস্থিত। এবং সেখানেও তিনি নানা কথা বলছিলেন বঙ্গবন্ধুকে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সিরাজুল আলম খান আব্বাকে বলেন, লিডার এটা কী করলেন, আপনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না? মানুষ সব হতাশ হয়ে চলে যাচ্ছে।’

‘তখন মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। আমার সাফ সাফ কথা বলার অভ্যাস সব সময়। আমি বললাম, আপনি মিথ্যা কথা বলেন কেন? কে বলেছে, আপনাকে মানুষ ফ্যাস্ট্রেটেড?’

‘আমি তো নিজেই সাক্ষী। আমরা তো কোনো ফ্যাস্ট্রেশন দেখলাম না। মানুষ মনে হচ্ছে খৈ এর মতো ফুটছে। আনন্দে আত্মহারা। হাতে যা আছে তাই নিয়ে নাচতে নাচতে যাচ্ছে, তারা স্বাধীনতা পেয়ে গেছে। তারা স্বাধীনতা আনবে, আপনি এখানে মিথ্যা কথা বলেন কেন? আপনারা কিছু দেখেননি, সোজা এখানে এসে মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বক্তৃতার আগে এই পরামর্শ, বক্তৃতার পর ওই পরামর্শ, কী রহস্যটা থাকতে পারে, সেটা ৭৫ এর পরে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে... এখন মনে হয় যে তারা সব সময় ষড়যন্ত্রের সাথে ছিল, সেটা এখন বুঝা যায়।’

স্বাধীনতার আগে ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন সিরাজুল আলম খান। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্রলীগে বিরোধের জেরে ১৯৭২ সাল একাংশ বের হয়ে এসে গঠন করে জাসদ। আর এই দলের তাত্ত্বিক গুরু ছিলেন সিরাজুল আলম খান। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্যপুরুষ’ হিসেবে চিহ্নিত। তার পরিচিতি ‘দাদাভাই’ নামে।

স্বাধীনতা উত্তর সময়ে ভীষণভাবে প্রভাবাশালী হয়ে উঠা সিরাজুল আলম খান অবশ্য এখন অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। নানা রোগে আক্রান্ত ‘দাদা ভাই’ সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসা করে এসেছেন।

ঢাকাটাইমস/০৯মার্চ/টিএ/ডব্লিউবি

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত, জাতির সামনে উপস্থাপন ৫ আগস্ট
সালথায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শাহিন গ্রেপ্তার
সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরীকে দেখতে হাসপাতালে পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে এনসিপি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা