চাঁদের কণার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ

শায়লা পারভীন, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ জুন ২০১৯, ২০:০০

সরকারি চাকরির দাবিতে দুইদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে বসা শারীরিক প্রতিবন্ধী চাঁদের কণা কোনে আশ্বাস পাননি। দুই দিন ধরে না খেয়ে তিনি বসে আছেন।

বুধবার থেকে অনশন শুরু করেছেন চাঁদের কণা। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টিতে ভিজেছেন তিনি, রোদে শুকিয়েছেন। কিন্তু তার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি।

ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স পাস করা সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মেয়ে চাঁদের কনার পুরো জীবনটাই কষ্টে পরিপূর্ণ। ৯ মাস বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হয়ে দুটি পায়ের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু ভেঙে পড়েনি তার মনোবল। হাতের ওপর ভর দিয়েই ঢাকা ইডেন কলেজ থেকে ২০১৩ সালে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স শেষ করেছেন। আর পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জন করেছেন নাচ, গান, কবিতা লেখা ও আবৃত্তিতেও।

টিভি/রেডিওতে সংবাদপত্র পাঠ, টিভি প্রোগ্রাম গ্রন্থনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনা, নাটক লেখা, নাটকে অভিনয়, কম্পিউটারের সকল কাজ, স্ক্রিপ্ট তৈরি, ছবি আঁকা, ভিডিও এডিটিংসহ হাতের কাজে নানান ধরনের পারদর্শিতা অর্জন করেছেন।

চাঁদের কণার মা হাসনা হেনা একজন শিক্ষিকা। মায়ের উপার্জনেই তাদের সংসার চলতো। ১০ বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর থেকে পেনশনের সামান্য টাকায় কোনো রকমে টিকে আছে তার পরিবার। মা যখন মারা যান তখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী চাঁদের কণা। তবে হাল ছাড়েননি, একটি বেসরকারি চ্যানেলে স্বল্প বেতনে চাকরি করে চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা।

পড়াশোনা শেষে সরকারি একটি চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু কিছুতেই মিলছে না সে চাকরি। চাঁদের কণা বলেন, ‘আমি নিজেকে কখনো প্রতিবন্ধী বলে মেনে নিতে পারিনি।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই নারী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের সকলের মা। দুঃখী মানুষের কষ্টে প্রধানমন্ত্রীর মন কাঁদে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দরভাবে কাটানোর জন্য একটি চাকরি চাই।

আমি হাঁটতে পারি না, এটা কি আমার দোষ? আমার অর্থের জোর নেই, দেহে সুস্থতা নেই, তবে কি মরে যাব? নাহ এত সহজে হেরে যাব না আমি। আমি বেঁচে থেকে প্রমাণ করে দিতে চাই, সমাজকে দেখাতে চাই মানুষের শরীর নয়, মানুষের প্রতিভা আর মনের জোর মানুষকে বড় করতে পারে। আমি সারা বিশ্বকে জানাতে চাই- আমি পারি, আমি অপরাজিত নারী।

আমার মা নেই। এখন প্রধানমন্ত্রী আমার মা। আমি আমার মমতাময়ী মায়ের কাছে যেতে চাই। তার বুকে একটু আশ্রয় চাই। সে ছাড়া যে আমার আর কোনো গতি নাই। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করেছি দারিদ্র্যতার কী কষ্ট। তার সাথে আবার শারীরিক সমস্যা।

দুঃখী মানুষের কষ্টে প্রধানমন্ত্রীর মন কাঁদে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দরভাবে কাটানোর জন্য একটি চাকরি চাই।

ঢাকাটাইমস/২৭জুন/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :