তলিয়ে গেছে শেরপুর-জামালপুর সড়কের কজওয়ে

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২২:৩১
অ- অ+

পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধির কারণে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরনো ভাঙন অংশ দিয়ে বন্যার পানি দ্রুত বেগে প্রবেশ করায় শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান কজওয়ের (ডাইভারশন) ওপর দিয়ে প্রায় দুই ফুট উচ্চতায় প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ওই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও যেকোন সময় শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে রাজধানী ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। শুক্রবারসহ গত দুই দিনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতীসহ অন্যান্য অঞ্চল থেকে পানি নেমে আসতে থাকায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সদরের নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি বাড়ায় প্লাবিত হচ্ছে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের বিলাসপুর গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মামুন মিয়া নামে আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মামুন স্থানীয় মীর্জা মিয়ার ছেলে।

এ নিয়ে ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় গত পাঁচ দিনে বন্যার পানিতে ডুবে দুই শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হলো।

এছাড়া বন্যার পানি উঠায় জেলায় ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছয় দিন ধরে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

প্রশাসনসহ একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের তথ্যমতে, বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যায় শেরপুরের পাঁচ উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ১৭২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান কজওয়েতে (ডাইভারশন) গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় চার ফুট উচ্চতায় বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশা চলাচল এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু বাস-ট্রাক ঝুঁকি নিয়ে ডাইভারশনে চলাচল করছে। আবার কেউ কেউ নৌকায় করে ডাইভারশন অংশটুকু পারাপার হচ্ছেন। সেখানে কথা হয়, স্থানীয় চরপক্ষীরী ইউনিয়নের পোড়ার দোকান এলাকার নির্মাণ শ্রমিক আকবর, নন্দিরজোত এলাকার আব্দুল হক, কৃষক শরীফ মিয়ার সঙ্গে। তারা বলেন, শেরপুর-জামালপুর সড়কের ডাইভারশনের ওপর দিকে রাতের মধ্যেই হাঁটু পানি উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে। বন্যার পানিতে তাদের বীজতলা, সবজি ও পাটের আবাদ তলিয়ে গেছে, বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকেছে।

তারা বলেন, যেকোনো সময় ডাইভারশনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বন্যার পানির যে অবস্থা, তাতে এবার প্রবল বন্যা হতে পারে।

বন্যায় জেলায় কৃষিবিভাগের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা না গেলেও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম জানিয়েছেন, বিভিন্ন পুকুর, জলাশয়সহ খামারের মাছ ভেসে ও পাড় ভেঙে প্রায় পাঁচ কোটি ১৮ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ক্যাম্প কাজ করবে। ইতোমধ্যে বন্যার্ত মানুষের জন্য ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ১০ টন করে এবং অপর ৩টি উপজেলায় ৫টন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নিবন্ধন স্থগিত হলেও ইসির তফসিলে থাকছে ‘নৌকা’, অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না ‘শাপলা’
ঋণের টাকার চাপে গৃহবধূর আত্মহত্যা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগে বিএনপির নতুন প্রস্তাব
খুলনায় যৌথ অভিযানে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবাসহ আটক ১
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা