ছিনতাইয়ে জগন্নাথের একাধিক ছাত্র

ইসরাফিল হোসাইন
  প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৩
অ- অ+

পুরান ঢাকায় একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নাম আসায় বিব্রত হচ্ছেন এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকরা। সেই সঙ্গে আছে মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য।

সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় মাদকসেবনের দৃশ্য ধরা পড়ে। আর প্রায়শই পাওয়া যায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ। ফুটপাতে ছোট ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের টাকাপয়সা বা মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়ার ঘটনা ঘটছে।

বিশেষ করে বাহাদুরশাহ পার্ক থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটে। আর এই ছিনতাইয়ের টাকা দিয়েই মাদকসেবনের অভিযোগ আছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল সেবন করতে প্রকাশ্যেই দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নিয়েও শিক্ষার্থীদের মাদকসেবন বন্ধ করতে সক্ষম হয়নি।

গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায় বাহাদুরশাহ পার্কের পাশে আকাশ ইন্টারপ্রাইজ পরিবহনের শ্রমিকদের কাছ থেকে ছিনতাই করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। এরা নিজেদের ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়েছেন।

স্থানীয়দের সহায়তায় সুত্রাপুর থানা পুলিশের সদস্যরা এই তিনজনকে আটক করেছে। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ১৩ ব্যচের শিক্ষার্থী তন্ময় সূত্রধর তুষার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগর দাস ও গণিত বিভাগের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আকলাম হোসেন অনিক ফয়সাল। এরা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলের কর্মী ছিলেন।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরা হলেন ১২তম ব্যাচের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আল ইকরাম অর্ণব ও ১৩তম ব্যাচের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের নওশের বিন আলমডেভিড। এদের মধ্যে অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত।

ক্যাম্পাসের গেট থেকে প্রক্টর মোস্তফা কামালের উপস্থিতিতে ওই দুই শিক্ষার্র্থীকে পুলিশে দেওয়া হয়। এ সময় সহকারী প্রক্টর নিউটন হালদার ও অধ্যাপক আব্দুল্লাহ মাহফুজ উপস্থিত ছিলেন।

গত মাসে ক্যাম্পাসে এক ছেলে ও মেয়েকে মারধর করে ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছিল অর্ণব ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। ধরা পড়ার দিন দুপুরে বাস ছাড়ার আগ মুহূর্তে মারমারিতে জড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে অর্ণবকে ধরতে অভিযান চালায় প্রক্টরিয়াল বডি। বাঁধা দেন ডেভিড। তার বিরুদ্ধে পুলিশ প্রিজন ভ্যানে হামলা, ছাত্রলীগের নারীকর্মীকে হয়রানি, সাংবাদিকদের উপর হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

প্রক্টর মোস্তফা কামাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আল ইমরান অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী। এর আগেও ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’

আটক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মওদুদ হাওলাদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুইজন শিক্ষার্থীকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনো মামলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

‘গত ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে ছিনতাইয়ের সময় আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলা করে সঙ্গে সঙ্গেই কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা