অনেক বিপত্তি, তবু অক্ষত তাদের ভালোবাসা

বিনোদন ডেস্ক
  প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:২২
অ- অ+

নিজের থেকে ১১ বছরের ছোট মেয়েকে প্রেম প্রস্তাব! প্রচণ্ড কুণ্ঠা ছিল মনে। প্রথম দেখা থেকেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল, মনে মনে ভালোও বেসে ফেলেছিলেন। কিন্তু বলার সাহস আর করে উঠতে পারছিলেন না। মনে মনে যিনি প্রেম প্রস্তাব গোপনে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি অভিনেতা ও পরিচালক সচিন পিলগাঁওকর। আর যাকে দেখে তার মন প্রেমের সমুদ্রে ডুব দিয়েছিল, তিনি অভিনেত্রী সুপ্রিয়া।

খুব বেশি দিন মনের কথা গোপন রাখতে পারেননি সচিন। উল্টো দিক থেকে যে এতটা অকপট স্বীকারোক্তি আসতে চলেছে তা না জেনেই মনের কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। বর্তমানে ৩৪ বছর একসঙ্গে রয়েছেন তাঁরা। ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুখী এবং লাভিং দম্পতি। তবে তাদের দেখে বিষয়টা যতটা সহজ মনে হয়, তা কিন্তু আসলে ছিল না। সচিনের সঙ্গে সুপ্রিয়ার প্রথম পরিচয় একটা মারাঠি ছবির শুটিং সেটে।

সচিন তার দ্বিতীয় মারাঠি ফিল্মের পরিচালনা করছিলেন তখন। ১৯৮৪ সালের সেই ফিল্মেই অভিষেক করেছিলেন সুপ্রিয়া। মাত্র ১৬ বছর বয়সে। ফিল্মের নাম ছিল ‘নাভারি মিলে নাভারিয়ালা’। এই ছবিতে ১১ বছরের ছোট সুপ্রিয়ার বিপরীতে সচিনই অভিনয় করেছিলেন। অত্যন্ত দায়িত্বশীল সুপ্রিয়া দ্রুত সব কিছু শিখে নিচ্ছিলেন। তার সাবলীল অভিনয় দেখে প্রথম দিন থেকেই সুপ্রিয়াকে ভালো লেগে গিয়েছিল সচিনের।

তারপর দিন যত গড়িয়েছে, একসঙ্গে দুজনে যত সময় কাটিয়েছেন, ততই আরও কাছাকাছি এসেছেন একে অপরের। দুজনেই মনে মনে একে অপরকে পছন্দ করতেন। কিন্তু দুজনের মনেই কুণ্ঠা ছিল। সচিন ভেবেছিলেন, পরিচালক যদি নিজের চেয়ে বয়সে এত ছোট সহ-অভিনেত্রীকে প্রেম প্রস্তাব দেন, তাহলে ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচনা শুরু হবে। আর সুপ্রিয়ার কুণ্ঠা ছিল, ইন্ডাস্ট্রিতে পা দেয়া মাত্রই প্রতিষ্ঠিত পরিচালককে প্রেম নিবেদন করাটা কি ঠিক হবে? তাছাড়া সুপ্রিয়া প্রথমে ভেবেছিলেন, সচিন বিবাহিত।

ফিল্মের শেষ শুটিংযের দিন সেটে সাহস করে কথাটা বলেই ফেললেন সচিন। যা শুনে ভীষণ বিস্মিত হয়েছিলেন সুপ্রিয়া। তার উত্তর ছিল, ‘মালা ভাতলা তুমহি লাগনা কেলা আছে’। যার অর্থ, ‘আমি ভেবেছিলাম আপনি বিবাহিত’। সচিন প্রথমে ভেবেছিলেন সুপ্রিয়া মজা করছেন। পরে বুঝতে পারেন তিনিও সিরিয়াস। দুজনের প্রেমের সূত্রপাত সেই থেকেই। কিন্তু এটা জানার পর বাড়িতে ঠিক কী প্রতিক্রিয়া হবে তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিলেন না সুপ্রিয়া। একে তো তার বয়স মাত্র ১৬ বছর, আর সচিনের ২৭। তার উপর সচিন তখন ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ নাম করেছেন।

বাড়িতে জানানোর সাহস করতে পারেননি সুপ্রিয়া। এদিকে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সচিনের সঙ্গে জোর প্রেম চলছে তার। বয়সের পার্থক্য কখনও দুজনের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। কিন্তু একদিন স্কুল থেকে সুপ্রিয়ার বাড়িতে চিঠি পৌঁছায়। তখন স্কুল ইউনিফর্ম পরে বেরোলেও প্রায়ই স্কুলে যেতেন না। স্কুলের থেকে সেই চিঠি পেয়ে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন তার বাবা-মা। কারণটা জিজ্ঞাসা করলে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে সুপ্রিয়া বাবা-মাকে সবটা বলে দেন।

বাবা-মা প্রথমে তাদের এই সম্পর্ক মেনে নেননি। কিন্তু পরে সচিনের সঙ্গে কথা বলে তাদের খুব পছন্দ হয়ে যায়। দুই পরিবারের সম্মতিতে ১৭ বছরের সুপ্রিয়ার সঙ্গে সচিনের বিয়ে হয় ১৯৮৫ সালে।

বিয়ের পরে দুজনের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া হত। অনেকে সচিনকে বলেছিলেন, এত বয়সের পার্থক্যে বিয়ে করাটা ঠিক হয়নি, এ বিয়ে বেশি দিন টিকবে না। কিন্তু সুপ্রিয়া জানিয়েছিলেন, কথা কাটাকাটির ফলেই একে অপরকে তারা আরও বেশি করে চিনেছেন। একে অপরের পছন্দ-অপছন্দ বুঝেছেন, একে-অপরকে সম্মান দিতে শিখেছেন। জীবনের ৩৪টা বছর একসঙ্গে কাটিয়ে তাদের প্রেমের উপহার একমাত্র মেয়ে শ্রিয়া।

ঢাকাটাইমস/২২ সেপ্টেম্বর/এএইচ

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা