কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর হোগলা মহেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী রবিউল ইসলামকে খুনের দায়ে করা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডও করা হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার দয়রাপুর এলাকার মৃত মুন্সী রেজাউল করিমের ছেলে সোহাগ। তিনি নিহত শিক্ষক রবিউল ইসলামের ভাতিজা।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার দয়রামপুর এলকার মজিবরের ছেলে রাজু আহম্মেদ, কোমরকান্দি এলাকার ইয়াকুবের ছেলে রুবেল এবং দূর্গাপুর এলাকার হাতেম শেখের ছেলে আজাদ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি রাত একটার দিকে হোগলা মহেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী রবিউল ইসলাম তার চাচাতো ভাইয়ের ইটভাটার কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। ইটভাটার দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে ভাতিজা সোহাগের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল তার। এজন্য মোবাইলে বিভিন্ন সময়ে রবিউলকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল সোহাগ।
২৪ জানুয়ারি বাড়ি ফিরে বারান্দার গ্রিলের তালা খুলে মোটরসাইকেল বারান্দায় ওঠানোর সময় একদল সন্ত্রাসীরা রবিউলের ডান কানের উপর দিকে মাথায় একটি গুলি ও ডান পাঁজরে একটি গুলি করে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় রবিউলকে উদ্ধার করে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহত রবিউল ইসলামের মা হাওয়া খাতুন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমারখালী থানা পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) এসএম আরিফুর রহমান ২০১৬ সালে ৩০ এপ্রিল চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী জানান, রায়ে শিক্ষক রবিউলকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সোহাগের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ সন্দোহীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে মামলার বাকি তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/প্রতিনিধি/এমআর

মন্তব্য করুন