জামালপুরে দরপত্র আহ্বানের আগেই প্রকল্পের কাজ শুরু!

জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে দরপত্র আহ্বানের আগেই প্রকল্পের কাজ শুরু করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ইসলামপুর কেন্দ্রীয় ইদগাহ মাঠ উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা কাজের এই কাজ মেয়র আব্দুর কাদের শেখ নিজেই করছেন। মেয়রের এই অনিয়ম নিয়ে পৌর কাউন্সিলরসহ এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৯-২০ অর্থবছরে জামালপুর আট শহর ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইসলামপুর পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সাতটি নতুন আরসিসি সড়ক এবং ইসলামপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা কাজের জন্য দুই কোটি ৮৫ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৬ টাকা ব্যয় ধরে আটটি প্রকল্প গ্রহণ করে তা অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের শর্তানুযায়ী ইজিপি (এলটিএম) পদ্ধতির মাধ্যমে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রকল্পের মধ্যে ইসলামপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা কাজের জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩৬ টাকা ব্যয়ে। ঈদগাহ মাঠ উন্নয়নের মধ্যে মাটি ভরাট ও মাঠের দুই পাশে প্রতিরক্ষা নির্মাণ কাজ রয়েছে। পৌর মেয়র আব্দুল কাদের শেখ দরপত্র আহ্বান না করেই তিনি নিজেই ইদগাহ মাঠের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামপুর পৌরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর এ প্রতিবেদককে বলেন, দুই কোটি ৮৫ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৬ টাকা ব্যয়ে আটটি প্রকল্পের মধ্যে কাজ বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু পৌর মেয়র আব্দুল কাদের শেখ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই ইসলামপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তার এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে কোনো কাউন্সিলর সাহস পান না। তারা নিয়মানুযায়ী উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

দরপত্র আহ্বানের আগেই ঈদগাহ মাঠের কাজ শুরুর বিষয়টি স্বীকার করে পৌর মেয়র আব্দুল কাদের শেখ বলেন, ঈদের নামাজের জন্য মুসুল্লিদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় এই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন করতে অনেক সময় লাগবে। এজন্য আসন্ন ইদুল ফিতরের মুসুল্লিরা যাতে এই ইদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করতে পারেন, সেজন্য দরপত্র আহ্বানের আগেই কাজ শুরু করা হয়েছে। আর এই বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের সঙ্গে আলাচনা করেই (সমঝোতা) কাজ শুরু করা হয়েছে।

এভাবে কাজ করার নিয়ম রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কয়েক দিনের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে বলেও জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/কেএম)