‘মেসি বার্সার চে গুয়েভারা’

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল ২০২০, ১৬:০২
অ- অ+

ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে ফুটবলারদের একটু আদ্য ঝামেলা লেগেই থাকে। বার্সেলোনার ক্ষেত্রে যে বিষয়টা বারবারই ঘুরেফিরে আসে। সম্প্রতি ফের একবার বার্সেলোনার বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন লিওনেল মেসি এবং তাঁর দলের বাকি সতীর্থরা। যদিও ক্লাবের দেওয়া ৭০ শতাংশ বেতন কম নেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছেন মেসি-সহ তাঁর টিমমেটরা। কিন্তু এহেন বিতর্ক দানা বাঁধতেই বোর্ডকর্তাদের একহাত নিয়েছেন মেসি। আর তারপরই ইউরোপের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম মেসিকে এক্কেবারে ‘চে গুয়েভারা’ উপাধি দিয়ে দিয়েছেন।

বিশেষ করে নামজাদা পত্রিকা 'এল'ইক্যুইপ' (l'equipe)। এই পত্রিকা তাদের প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে হুবহু চে-র মতো মেসির একটি গ্রাফিক প্রকাশ করেছে। কিউবার এই প্রতিবাদী নেতার সঙ্গে মেসির বিপ্লবের সামঞ্জস্য খুঁজে শিরোনামে লিখছে, 'লিওনেল মেসি, দ্য চে অব বার্সা’।'অর্থাৎ বার্সেলোনার চে গুয়েভারা লিওনেল মেসি।

মারণ ভাইরাস করোনার কোপে বিশ্বজুড়েই প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় প্রায় সব ক্লাবেরই আয়ে। এমনই সংকটজনক পরিস্থিতিতে প্রায় সব ক্লাবেরই প্লেয়ারদের বেতন কমিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে হয় ক্লাবকর্তাদের। যেমনটা বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও ঘটে। মেসির দলের প্লেয়াররা প্রথমে এই প্রস্তাব মানতে নারাজ হলেও পরবর্তীতে বেতনের ৭০ শতাংশ ছেড়ে দিতে সম্মতি জানান। কিন্তু এরই মাঝে আবার স্প্যানিশ বেশ কিছু মিডিয়ায় লেখা হয় যে, বেতন কমানোর প্রস্তাবে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন মেসি-সহ বার্সেলোনার অন্যান্য প্লেয়াররা। এরপরই সরব হন মেসি। ইনস্টাগ্রামে লম্বা একটি পোস্ট লিখে ক্লাবকর্তাদের ভর্ৎসনা করেন ছ'বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ৩৩ বছর বয়সী তারকা।

যদিও এমনই বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ার কারণে সোমবারই নিজস্ব ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি জারি করে বেতন কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, 'করোনাভাইরাসের এমনতর সংকটজনক পরিস্থিতিতে বার্সার সব ধরনের পেশাদার প্লেয়ারদের সঙ্গে বোর্ডের একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। আর সেই চুক্তিকে প্রতিটি প্লেয়ারই কম বেতন নেওয়ার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।'

তবে ইনস্টাগ্রামে মেসি যে পোস্টটি করেছেন, তা নজর কাড়বে যে কারও। প্রথমেই তিনি বলছেন, 'স্বেচ্ছায় বেতন কমানোর প্রস্তাবে সায় দিয়েছি। কারও চাপে নয়। আমরা প্রথমেই একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিতে চাই যে, বেতন কমানোর বিষয়ে আমরা সবসময়ই আগ্রহী ছিলাম। কারণ, যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গোটা বিশ্ব যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে আমাদের কর্তব্য বেতন কমানো। ক্লাব জিজ্ঞেস না করলেও আমরা সবসময়ই সাহায্যের জন্য প্রস্তুত ছিলাম।'

পাশাপাশিই মেসি আরও লেখেন যে, 'কিন্তু মাঝেমধ্যেই অবাক লাগে যে এই ক্লাবেরই এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা আমাদের আতসী কাঁচের নীচে রেখে অহেতুক চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। যে চাপ আমরা নিজেরাই নিতে প্রস্তুত, তার জন্য জোরজবরদস্তি করার কোনও প্রয়োজন নেই।'

বার্সার মেইন ম্যান মেসি এরপরই লেখেন, ‘এতদিন কোনও কথা বলিনি কারণ, ক্লাবের সাহায্যার্থে একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করাকে আমরা সবসময়ই অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছি। আর এই পরিস্থিতিতে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটাও বুঝতে চেয়েছি। এখন সময় এসে গিয়েছে। এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমাদের বেতনের ৭০ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে। কর্মচারীরা যেন শতভাগ বেতন পান সেই জন্যই ক্লাবকে সাহায্য করে যাব আমরা।'

যদিও বলা বাহুল্য বার্সেলোনার ফুটবল দলই একমাত্র নয়, বাস্কেটবল-সহ ক্লাবের সব ধরনের পেশাদার দলের খেলোয়াড়রাই বেতন কাটার প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত সংকটে ক্লাবের অন্যান্য কর্মচারীরা যেন সঠিক সময়ে শতভাগ পারিশ্রমিক পান, তা নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ক্লাবের তরফে।

(ঢাকাটাইমস/১ এপ্রিল/এসইউএল)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভালুকায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের দাফন-সৎকার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
শহীদ আবু সাঈদের মাকে নিয়ে ‘কটূক্তি’, পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা