হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিনের ট্রায়াল শুরু করছে অক্সফোর্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২০, ১২:৫১
অ- অ+

কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে আসতে এখনও দেরি আছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি জানিয়েছিল তাদের তৈরি ভেক্টর ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ করে সার্বিকভাবে তার প্রয়োগ শুরু হতে পারে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে। তবে মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী হচ্ছে তার ওপরেই সব নির্ভর করছে। মধ্যবর্তী এই সময়টাতে জরুরি অবস্থার ভিত্তিতে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অক্সফোর্ড। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিনের ট্রায়ালও শুরু হবে।

কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় অগ্রনী ভূমিকা নিচ্ছেন যেসব ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিক্যাল স্টাফরা তাদের ওপর তো বটেই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে এমন প্রবীণ ব্যক্তিদের ওপরেও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল করবেন অক্সফোর্ডের গবেষকরা। খবর ব্লুমবার্গের।

অক্সফোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা নির্দিষ্ট ডোজে এই ওষুধ দেওয়া হবে। পাশাপাশি, প্রবীণদের বেছে নেওয়া হয়েছে এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য যাদের বয়স ৫০ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে বা তার বেশি। ক্রনিক ডায়াবেটিস, হাঁপানি আছে এমন রোগী যাদের কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি তাদের ওপরও ট্রায়াল করা হবে।

তারা জানিয়েছেন, মৃদু সংক্রমণ ধরা পড়েছে যেসব রোগীর তাদেরও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের একটা নির্দিষ্ট ডোজ দিয়ে দেখা হবে তার প্রভাব কেমন হচ্ছে। তার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে এমন রোগীদের বেছে নেওয়া হবে।

গবেষকরা বলছেন, করোনার সংক্রমণে রোগীদের মধ্যে নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। উপসর্গহীন রোগী যাদের শরীরে সংক্রমণের কোনো বাহ্যিক প্রকাশ নেই তারা একটা ক্যাটাগরিতে পড়ছেন। বাকি রোগীদের মধ্যে কারও শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে, কারও শ্বাসের সমস্যা না থাকলেও শরীরে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া নতুন প্রি-সিম্পটোমেটিক রোগীদের মধ্যে নানারকম লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে যেমন পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, বমিভাব, ভুল বকা, বুকে ব্যথা বা আচমকা হার্ট অ্যাটাক। হঠাৎ করেই হাতে-পায়ের আঙুলে বা গোড়ালিতে লালচে-বেগুনী র‍্যাশ, ঘা কোভিড সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরে নিচ্ছেন ডাক্তাররা। এমন উপসর্গ এক সপ্তাহ মতো থাকে তারপর মিলিয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে টেস্ট করিয়ে অনেকেরই কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে।

অক্সফোর্ডের গবেষকদের দাবি, এই সমস্ত উপসর্গ দেখা দিয়েছে এমন রোগীদের শুরুতেই ওষুধ খাওয়ালে সংক্রমণ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের জন্য এমন রোগীদেরও বেছে নেওয়া হবে।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিন্তার মূল কারণ। সেই কারণেই এই ওষুধের সার্বিক প্রয়োগে ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হাইড্রক্সক্লোরোকুইনকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে দাবি করলেও মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রের (এফডিএ) জানিয়ে দিয়েছে এই ওষুধের ব্যবহার হলে তার জন্য গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।

নির্দিষ্ট ডোজের বেশি ওষুধ মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাছাড়া স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়া ওষুধ দিলে তার ফল মারাত্মকও হতে পারে। অক্সফোর্ড জানাচ্ছে, ঝুঁকি যাদের বেশি বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও আছে এমন রোগীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুই দিতে হলে কী মাত্রায় দিতে হবে তার প্রোটোকল তৈরি হচ্ছে। প্রথম সাতদিনের কোর্সে এই ওষুধ যদি নির্দিষ্ট ডোজে খাওয়ানো হয় তাহলে সংক্রমণ শুরুর আগেই তাকে আটকানো সম্ভব বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গেই অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিনেরও ট্রায়াল করা হবে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড। শরীরে ব্যাকটেরিয়ার বাড়বৃদ্ধি বন্ধ করতে পারে এই ওষুধ। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এই ওষুধের তেমন ব্যবহার নেই।

গবেষকরা বলছেন, অনেক সময় ভাইরাসের সংক্রমণ ধরে গেলে তার সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও থাকে। মিলিত প্রভাব ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে। আবার কখনও আশঙ্কা থাকে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণেরও। সেসব ঠেকাতে এই ওষুধ দিতে হয়। তাছাড়া অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রদাহজনিত রোগ সারায়। করোনার সংক্রমণে ইমিউনো-ইনফ্ল্যামেশন বা অধিক প্রদাহ হচ্ছে রোগীর শরীরে। তাকে থামাতেও এই ওষুধ কার্যকরী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঢাকা টাইমস/১৩মে/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শহীদ জিয়া’র মাজার এলাকায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পরিচ্ছন্নতা অভিযান
ভালুকায় পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ছাড়াই গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতদের দাফন-সৎকার
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা