সচিবের পর এবার বদলি হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পিএস’ও!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ জুন ২০২০, ০৯:২৮| আপডেট : ০৯ জুন ২০২০, ০৯:৩৯
অ- অ+

বছরের শুরুতে দুর্নীতির অভিযোগে সরিয়ে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আরিফুর রহমান সেখকে। স্বাস্থ্যসেবায় নানা অব্যবস্থাপনা ও করোনাকালের সংকট মোকাবিলায় কার্যত ব্যর্থতার আলোচনা যখন তুঙ্গে, তখন বদলি করা হয় স্বাস্থ্যসেবা সচিব আসাদুল ইসলামকে। গত ৪ জুন এই বিভাগে এসেছেন নতুন সচিব। এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব (পিএস) মো. ওয়াহেদুর রহমানকেও বদলি করা হচ্ছে বলে জনপ্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে জর্জরিত এই মন্ত্রণালয়ে ‘শুদ্ধি অভিযান’ চলছে বলে মনে করছেন প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এর ধারাবাহিকতায় একের পর এক পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব পদে পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে সবঠিক থাকলে শিগগির এই পরিবর্তন হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

এর আগে ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পিএস হিসেবে নিয়োগ পান ওয়াহেদুর রহমান। এর আগে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব ছিলেন।

সরকারের প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটা, নিয়োগ, বদলি-পদায়ন, বরাদ্দ, অনুমোদনসহ নানা খাতে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ বেশ পুরনো। দীর্ঘদিন ধরেই এটি চলে আসছে। গত মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে স্বাস্থ্যসেবা খাতের নানা অনিয়ম সামনে আসে। বেরিয়ে আসে অনেক দুর্নীতির খবর। ভেতরে ভেতরে স্বাস্থ্যখাতে যে এতটা অব্যবস্থাপনা চলছে তা চলমান সংকটকালে দৃশ্যপটে এসেছে। এসব কারণে সরকার প্রধানের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠানটিতে ধীরে ধীরে চালানো হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান। পরিবর্তন আনা হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে।পুরনোদের খোলনলচে বদলে ফেলে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে নতুনদের।

গত ৪ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নতুন সচিব হিসেবে মো. আবদুল মান্নানকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এর আগে তিনি ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।

অভিযোগ আছে, বিভিন্ন হাসপাতালে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় অনিয়মের পেছনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দপ্তর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কারো কারো যোগসাজশ রয়েছে। যারা কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেন। এসব কারণেই যন্ত্রপাতির বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায় করার সুযোগ পান ঠিকাদাররা। অপব্যয় হয় সরকারি অর্থের। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের আরও নানাখাতে আর্থিক অনিয়মের সঙ্গেও তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আরিফুর রহমান সেখের বিরুদ্ধে এমন সুস্পষ্ট অভিযোগ পায় দুদক। সেই সুবাদে গত ১৪ জানুয়ারি দুদকে তলব করা হয় তাকে। এর পরদিনই মন্ত্রীর এপিএস পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। সেই থেকে এই পদটি শূন্য আছে। কাউকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

আরিফুর রহমানকে তলব করে দুদকের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে বিদেশে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ লোপাট এবং বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়াসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে। ওই বিষয়ে বক্তব্য দিতে তাকে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তলব করা হয়। পরে সময় বাড়িয়ে নিয়ে দুদকে হাজির হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দুর্নীতি-অনিয়ম ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলছে।

এদিকে দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন স্বাস্থ্যসেবা সচিব আবদুল মান্নান গত ৬ জুন এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নিজের মত তুলে ধরে লেখেন, নতুন এই দায়িত্ব তাকে এক কঠিনতম চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘জাতীয় জীবনের এমন উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ও মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপদান, চাওয়া পাওয়ার মিল অমিলে আমরা কী বিস্ময়কর কিছু করে উঠতে পারবো? বিদ্যমান এবং দৃশ্যমান চিত্রটি কী রাতারাতি বদলে দেয়া যাবে?’

এগিযে যাওয়ার আত্মপ্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘তবুও বলছি, আমি মোটেও ভীত নই, হতাশ নই, জয়ের ব্যাপারে, উত্তরণের পথে আত্মপ্রত্যয়ে দৃঢ় পায়ে সামনে হেঁটে যাবো।’

(ঢাকাটাইমস/৯জুন/এইচএফ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যারা পিআর নির্বাচন চাইছে তারা ‘চরের দল’: সালাহউদ্দিন
ইমন-হৃদয়ের অর্ধশতকে লড়াকু পুঁজি বাংলাদেশের
মালয়েশিয়ার অভিযোগে জঙ্গি সন্দেহে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজন কারাগারে
পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী নেতাদের দমন-পীড়ন ছিল ইয়াজিদের সমতুল্য: তারেক রহমান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা