পাট ও পাটজাত পণ্যে নতুনত্ব আনতে হবে

ইয়াহিয়া মির্জা
  প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০২০, ১৪:৫৭
অ- অ+

ছাত্রজীবনে ‘পাট’ রচনা নিয়মিত লিখতে হতো। তাই এর ঐতিহ্য সম্পর্কে তখন থেকেই অনেক কিছু জানতে পারি। এই ঐতিহ্যের কারণে অর্থকরী ফসল পাট আসলেই আমাদের গর্বের বিষয়। পাটকে এখনো আমরা ‘সোনালী আঁশ’ বলতে ভালোবাসি। অথচ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে পৃথিবী অনেক এগিয়ে গেছে। তাই পাটের আগের চাহিদা আর নেই। আমাদের দেশেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে শীর্ষ অবস্থানে নেই পাট ও পাটজাত পণ্য।

সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে গার্মেন্টস ও জনশক্তি রপ্তানির মতো সেক্টর। তাই বলে পাট নিয়ে আর সম্ভাবনা নেই তা নয়। সময়ের সাথে মানুষের চাহিদা পাল্টায়। সেভাবে কোনো কিছু পাল্টাতে পারলে আবার নতুন সুযোগ তৈরি হয়। পাট নিয়ে সেভাবেই আগাতে হবে আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জাতীয় সংসদে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। পাটকল বন্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৫০-৬০ এর দশকে তৈরি পাটকল দিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। সরকার তাই এগুলো নতুনভাবে তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।

আমিও সেভাবেই বলতে চাই, পাট ও পাটজাত পণ্যে নতুনত্ব আনতে হবে। পাটকলে যদি আদ্যিকালের মতোই চট, বস্তা ও দড়ি তৈরি হয় তাহলে বিশ্ববাজার ধরা যাবে না। বরং নতুন করে চিন্তা করতে হবে। যতটুকু জানি, পাটের হস্তশিল্পের চাহিদা আছে উন্নত বিশ্বে। সেটায় জোর দিতে হবে। পাটের জুতা, পাটের জিন্স কাপড়সহ আরো অনেক নতুন পণ্যের কথা শুনি। পাটকাঠির ছাই-ও নাকি আমাদের দেশে থেকে রপ্তানি হয়। এসব নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারি বা বেসরকারি বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন নতুন পাটপণ্য তৈরি ও এগুলো বাজারজাত করার ক্ষেত্রে। রপ্তানির বাজার ধরার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট মহলকে।

বাংলাদেশের সরকারের বড় একটা গবেষণা হয়েছে পাট নিয়ে, সেটা হলো পাটের পলিথিন উদ্ভাবন। বছরখানেক আগে এই কাজে সফল হওয়ার কথা জেনেছি। পাটের পলিথিন নিয়ে যদি বিনিয়োগ করা যায়। আর তা যদি বিশ্ববাজারে রপ্তানি করা যায়, তাহলে বিশাল আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। কারণ পচনশীল পলিথিনের চাহিদা তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ায়।

অনেকেই ভাবতে পারেন পাট নিয়ে কথা বলছি কেন। আসলে সরকারি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করার পর, এই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা হচ্ছে। বন্ধের জন্য অব্যবস্থাপনার দায় আছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আমার কথা হলো, পাট নিয়ে গতাণুগতিক চিন্তা করলে হবে না। নতুন করে সবকিছু ঢেলে সাজাতে হবে। বন্ধ সরকারি পাটকল পিপিপির মাধ্যমে আবার চালুর ঘোষণা করা হয়েছে।

সেখানে কিন্তু দড়ি, বস্তা ও চট নিয়ে বসে থাকলে কাজের কাজ হবে না। পাটের নতুন ব্যবহার সম্পর্কে কোনো কিছু করতে হবে। পরিশেষে বলবো পাটচাষীদের কথা। এখন পাট কাটার মৌসুম চলছে। তারা সোনালী আঁশ ঘরে তুলছেন লাভের মুখে দেখার আশায়। চাষীরা যাতে পাটের ন্যায্যমূল্য পান- এই কামনা করে শেষ করছি।

লেখক: হেড অব পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া ডিভিশন, সিটি ব্যাংক

ঢাকাটাইমস/৬জুলাই/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও একজন গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা