চার জনপ্রতিনিধির দুজনই অপকর্মের দায়ে বরখাস্ত

পাবেল খান চৌধুরী, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০২০, ০০:৫৬

এক উপজেলায় মোট জনপ্রতিনিধি চারজন। এর মধ্যে দুজনই বরখাস্ত। একজন অস্ত্র মামলায় হয়েছেন ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। বেশকিছু দিন কারাভোগ করে সম্প্রতি এসেছেন জামিনে। অন্যজন ত্রাণের চাল চুরির মামলায় আসামি হয়ে হাজতে যেতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এর মধ্যে ৭ নম্বর নুরপুর ইউনিয়নকে দুই ভাগে বিভক্ত করে আরো একটি ইউনিয়ন গঠন করে বর্তমান সরকার। জনসেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় নুরপুরকে বিভক্ত করে ব্রাক্ষণডুরা নামে আরো একটি নতুন ইউনিয়ন করা হয়। একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা হয় শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা। মাত্র অল্পদিনের মধ্যেই শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভাকেও প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় রূপান্তরিত করা হয়। উপজেলা ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ওই উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। নির্বাচেন ৭নং নুরপুর ইউনিয়নে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক মোঃ মুখলিছ মিয়া, ৮নং শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নে স্থানীয় আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, ১১নং ব্রাক্ষণডুরা ইউনিয়নে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ আদিল জজ মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু নির্বাচনের পর থেকে একে পর এক অনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে বুলবুল খান ও মুখছিল মিয়া জেলা জোরে বির্তকিত হয়ে উঠেন। জেলার সর্বত্র এই দুই জনপ্রতিনিধি ভিন্ন পরিচয়ে পরিচিতি লাভ করেন। তবে পুর্বে ২০১২ সালের ১৫ মার্চ র‌্যাব-৯ সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বুলবুলের বাড়ি থেকে অস্ত্রসহ তাকে আটক করে। পরে র‌্যাব বাদি হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অস্ত্র মামলা দায়ের করেন। নির্বাচনের পুর্বে ওই মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধিন ছিল। মামলা চলমান অবস্থায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বুলবুল খান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ৮নং শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বুলবুল খান এর উপর দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে গতকাল বহিষ্কার করা হয়। এর পর আওয়ামীলীগও তাকে দল মৌখিক ভাবে বহিস্কার করে।

অন্য দিকে করোনা মহামারির সময়ে ৭ নম্বর নুরপুর ইউনিয়নে ত্রাণ ও ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগে বরখাস্ত হন চেয়ারম্যান মুখলিছ মিয়া। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধেও একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় তিনি সম্প্রতি হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনিও কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে চেয়ারম্যান বুলবুল খাঁনকে বরখাস্ত করা হয়।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল বলেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বুলবুল খানের বরখাস্তের বিষয়টি আমরা গতকালকে মাত্র জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে দলীয়ভাবে সভা ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে নুরপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুখছিল মিয়াকেও দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :