মান্নান গাজীর ঘুড়ির দখলে চাঁদপুরের আকাশ
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম বাংলার ঘুড়ি উড়ানোর ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে। নানা ধরন আর রঙের ঘুড়িতে এখন আর গ্রাম-মফস্বলের আকাশ ছেঁয়ে যায় না। তবে করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি থেকে অনেকেই বাড়ির ছাদে বা পাশে উড়াচ্ছেন ঘুড়ি।
দেশের অনেক এলাকার মতো চাঁদপুরের শিশু-কিশোর ও যুবক থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ এখন ঘুড়ি উড়ানোর প্রেমে পড়েছে। এই সুযোগে বেকার হয়ে পড়া বিভিন্ন পেশার অসংখ্য কারিগররা এখন ঘুড়ি বানানোর কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। চাঁদপুর শহরের এমন অনেকেই ঘুড়ি তৈরি করে দিনে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা আয় করছেন। কারিগরদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন মান্নান গাজীর ঘুড়ি। মান্নান চাঁদপুর শহরের নাজির পাড়া দেওয়ান বাড়ির বাসিন্দা। পেশা তার রং মিস্ত্রি হলেও করোনা পরিস্থিতিতে ঘুড়ি বানিয়ে সব বয়সী মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।
ঘুড়ি প্রেমী চাঁদপুর শহরের স্টেডিয়াম-বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোডের কয়েকজন যুবক বলেন, ‘পরিবার থেকে করোনা সময়ে বাইরে বের হতে দেয়নি। তাই বাড়ির ছাদেই ঘুড়ি উড়িয়ে সময় পার করছি। শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুড়ি বিক্রি করলেও আমরা মান্নান ভাইয়ের কাছ থেকে ঘুড়ি কিনি। তার হাতে জাদু আছে। তার বানানো ঘুড়ি খুব সুন্দর উড়ে। মান্নান ভাইয়ের ঘুড়ির জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে বলে রাখতে হয়। এছাড়া দামও কম। তাই তার ঘুড়ি আমাদের কাছে প্রিয়।’
এ ব্যাপারে আবদুল মান্নান গাজী বলেন, ‘উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়ে এবং শিশু ও কিশোরদের কাছে আমার ঘুড়ির চাহিদা অনেক বেশি। আমি প্রতিদিন শতাধিক ঘুড়ি বিক্রি করি। অন্যরা ১৫ টাকা বিক্রি করলেও ১০ টাকা করে প্রতি পিস ঘুড়ি বিক্রি করি। আর অন্য ব্যবাসায়ীদের কাছ আট টাকা করে বিক্রি করি। তবে আমার কাছে আনন্দ লাগে, যখন সবাই ভালোবেসে অন্যদের বাদ দিয়ে আমার কাছে ঘুড়ি কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসে। প্রতিদিন শত শত যুবক ঘুড়ির জন্য আসে। তারা বলে,মান্নান ভাইয়ের ঘুড়িতে যাদু আছে, তার ঘুড়ি ভালো উড়ে। আমার জন্য সেটা অনেক টাকার চাইতে শান্তির।’
(ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/পিএল)