খালেদার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কী ভাবছে বিএনপি

বোরহান উদ্দিন, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ আগস্ট ২০২০, ১৯:১৪| আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২০, ২২:৩২
অ- অ+
ফাইল ছবি

সরকারের বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি পাওয়া বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে ভাবছে তার দল ও পরিবার। গত ১৫ মার্চ মুক্তি পাওয়া খালেদা জিয়ার এই মেয়াদ শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।

চিকিৎসার জন্য মুক্তি মিললেও শারীরিক অসুস্থতার খুব বেশি উন্নতি নেই খলেদা জিয়ার। তাই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো ও উন্নত চিকিৎসার বিষয় নিয়ে করণীয় ঠিক করতে দল ও পরিবারে আলোচনা চলছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কবে আবেদন করা হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে মুক্তির আবেদনের মতো এবারও মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করবেন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা। দলের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, চেয়ারপারসনের পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে কবে নাগাদ মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে।

যথাযথ প্রক্রিয়ায় মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন ও তা ফলপ্রসূ করার বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে দল ও পরিবারের তরফে। এ-সংক্রান্ত আবেদন করা হলে তা বিবেচনা করার আশ্বাস আছে সরকারের পক্ষ থেকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ঢাকা টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ বিবেচনায় পাওয়া মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হবে। তবে কবে সেটা করা হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকেই সরকারের কাছে আবেদন করা হবে যতটুকু জানি।’

ঈদের পর আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে জানা গেছে। খালেদা জিয়া একান্ত প্রয়োজন না হলে দেশের বাইরে চিকিৎসা করাতে আগ্রহী নন বলে জানান তার আইনজীবী।

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে তা পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে। আবেদন করার পর বিষয়টি দেখা হবে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২৫ মাস কারাভোগ করে গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। শর্ত ছিল, এই সময়ে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় মুক্তির পর থেকে খালেদা জিয়াকে অবস্থান করতে হয় গুলশানের বাসায়। প্রথমে ছিলেন কোয়ারেন্টাইনে। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় বাসার বাইরে কোনো হাসপাতালে যেতে পারেননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বাসাতেই নিজের চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলতে হয়েছে তাকে।

বিএনপি নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, আপাতত মুক্তি মিললেও দলীয় প্রধানের উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ হয়নি। তাই বাতের সমস্যাসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতার খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এখন তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘এতদিনেও কোনো যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ায় খুব বেশি পরিবর্তন নেই। তারপরও বাইরে থাকায় কিছুটা স্বস্তিবোধ করছেন। উনি (খালেদা জিয়া) চান করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে দেশে ভালো চিকিৎসা করাতে। আর হাঁটুর রিপ্লেসমন্টে যেহেতু বিদেশে হয়েছে সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে কেবল বাইরে যেতে চান।’

কবে নাগাদ পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হতে পারে এমন প্রশ্নে জবাবে এই আইনজীবী বলেন, ‘সময় এখনো দেড় মাসের মতো আছে। তবে শিগগিরই আবেদন করার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা তো সবাই চাই চেয়ারপারসন মুক্ত পরিবেশে থাকুন। যেহেতু পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনে তিনি মুক্তি পেয়েছেন, মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টিও নিশ্চয়ই তারা দেখবেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে কারাদণ্ডের রায়ের পর সেদিনই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার পুরাতন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সে থেকে বন্দি খালেদা জিয়া মুক্তির আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে ২৫ মার্চ মুক্তি পেয়ে তার গুলশানের বাসায় যান।

(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত, জাতিসংঘের গভীর উদ্বেগ
রাজনীতিতে অভিভাবক দল হিসেবে আমরা বারবার ধৈর্য ধরেছি: অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া
এনবিআরের আরও ৬ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরখাস্ত
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা