বন্যায় সিরাজগঞ্জে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি ২৩ কোটি টাকা

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট ২০২০, ২২:৫৯

মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাতে ২১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার এবং মৎস্য খাতে দুই কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। ৫৯২ জন মাছ চাষি ও পুকুর মালিক এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নাম ও ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানোর দাবি করেছেন কৃষি ও মৎস্য চাষীরা।

মঙ্গলবার দুপুরের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ ও মৎস্য বিভাগ ক্ষতির বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছে।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যায় জেলার নয়টি উপজেলায় দুই হাজার ২৩ হেক্টর সবজি, সাত হাজার ২৭০ হেক্টর পাট, তিল এক হাজার ৭৬০ হেক্টর, আউশ দুই হাজার ৬৫৫ হেক্টর, আঁখ দুই হাজার ৬২ হেক্টর, বোনা আমন সাত হাজার ৫৭২ হেক্টর, রোপা আমন ৩৪৬ হেক্টর, বীজতলা ৬১৩ হেক্টর সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। মোট ২২ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাবিবুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো ফসলি মাঠে পানি আছে। এবারের বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় জেলার ৭৬০টি পুকুর, যার আয়তন ২৬৭ হেক্টর চার শতক। এসব পুকুরের ১৫১ মেট্রিক টন ৩০ কেজি মাছ ও নয় লাখ ১৯ হাজার পোনা ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া মাছের মূল্য ২ কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ও পোনার মূল্য ১৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩১ লাখ ৭ হাজার টাকা। মোট ক্ষতি দুই কোটি ৫২ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ টাকা।

তাড়াশ উপজেলার মৎস্য চাষী আব্দুল মান্নান বলেন, দুই বিঘা জমির উপরে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করেছিলাম। পুকুরে দেড় লাখ টাকার মাছ ছিল। বন্যা শুরু হলে পুকুরপাড়ে নেট দিয়ে ঘিরে দেই। কিন্তু পানির স্রোতে নেট ছিঁড়ে মাছ বের হয়ে গেছে। এখন কিভাবে সংসার চালাবো, কিভাবে ধার দেনা শোধ করবো সে দুশ্চিন্তায় চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। এ অবস্থায় সরকার আমাদের পাশে দাঁড়াবে এটাই আশা করছি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী বলেন, জেলায় মৎস্য খাতে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মৎস্য চাষীকে পুকুরে বেশি বেশি করে খাবার দিতে বলছি। এছাড়া পুকুরে গাছের ডাল ফেলার পরামর্শ দিচ্ছি। এতে করে মাছ পুকুরে আশ্রয় নেবে। মৎস্য চাষীরা কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :