নারী শিক্ষকের প্রতি বেরোবি প্রশাসনের বৈষম্যের অভিযোগ

ইভান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০২০, ১৫:৫৯
অ- অ+

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর ও জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষক মীর তামান্না ছিদ্দিকার শিক্ষাছুটির ছাড়পত্রের জন্য তাকে ডরমেটরি ছাড়ার নতুন শর্ত আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতিপূর্বে কোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রে এমন শর্ত আরোপ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন শর্তে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে বৈষম্যের শিকার হন আরেক নারী শিক্ষক। বিভাগীয় প্রধান পদে সবাইকে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হলেও ওই নারী শিক্ষককে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। এমন নিয়োগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং নারীর প্রতি অবিচার উল্লেখ করে উপাচার্য বরাবর তখন স্মারকলিপি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

এই দুই ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, বর্তমান প্রশাসন নিয়মের তোয়াক্কা না করে নারী শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।

গত ১৮ জুলাই অধ্যায়ন ছুটির জন্য আবেদন করেন মীর তামান্না ছিদ্দিকা। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে অধ্যায়ন ছুটি কমিটি সভার সুপারিশ এবং পরবর্তী সিন্ডিকেট সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এক বছরের জন্য শিক্ষাছুটি মঞ্জুর করে। এই শিক্ষকের ছুটি মঞ্জুরের যে অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে সেখানে নয়টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। নয়টি শর্তের মধ্যে ছয় নম্বর শর্তে বলা হয়েছে- তার নামে বরাদ্দকৃত ডরমেটরি ফ্ল্যাট ছাড়পত্র নেয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এই শর্তটি শুধু ওই নারী শিক্ষকের জন্যই আরোপ করা হয়েছে। এর আগে যারা (নারী/পুরুষ) শিক্ষাছুটিতে গেছেন কিংবা এখনো শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এমন কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডরমেটরিতে রয়েছেন এমন তিনজন শিক্ষক শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন। তিনজন শিক্ষকই শিক্ষাছুটিতে থেকে তারা ডরমেটরিও নিজেদের আওতায় রেখেছেন। এছাড়াও এর আগে যারা ডরমেটরিতে থাকা অবস্থায় শিক্ষাছুটি ভোগ করেছেন তাদের কারো ক্ষেত্রেই এমন কোনো শর্ত আরোপ করা হয়নি।

এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষক তামান্না সিদ্দিকা ছয় নম্বর শর্তটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য অধ্যয়ন ছুটি কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বরাবর অনুরোধ জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মারুফা রহমান বলেন, যেহেতু এরকম কোনো নিয়ম নেই যে, শিক্ষাছুটিতে গেলে ডরমেটরি ছাড়তে হবে, তাহলে এই নারী শিক্ষকের বেলায় কেন এমন শর্ত আরোপ করতে হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, আসলে বিষয়গুলো যথাযথভাবে নিয়ম মেনে বাস্তবায়ন করা উচিৎ। নিয়ম বহির্ভুত এমন কর্মকাণ্ড স্পষ্টত জেন্ডার বৈষম্য। নারীর প্রতি এমন বৈষম্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূখপাত্র (মৌখিক) তাবিউর রহমান, রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তারা কেউ রিসিভ করেনি।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ পৌরসভায় শেষ হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ: অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথায় বোতল মারল কে?
কিছু ঘটলেই যমুনায় যাওয়ার প্রবণতা সহ্য করা হবে না: উপদেষ্টা মাহফুজ 
সিলেট থেকে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে মদিনায় গেল প্রথম হজ ফ্লাইট
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা