করোনাভাইরাস ধ্বংস করে আয়োডিন!

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:০০| আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:১০
অ- অ+

করোনাভাইরাস আরএএন ভাইরাস। অত্যন্ত ছোঁয়াচে; এটি যেমন হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মাইক্রোড্রপলেট আকারে ছড়ায়, তেমনি রোগীর ব্যবহার্য, পরিবেশে বিদ্যমান কাপড়, প্লাস্টিক, ধাতব ও অন্যান্য ফোমাইটের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। মাইক্রোড্রপলেট আকারে বাতাসে ভাসমান ভাইরাস প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা জীবিত থাকলেও ধাতব ও প্লাস্টিকসহ অন্যান্য ফোমাইটে আঠার মতো লেগে তা ৩ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।

গবেষক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ভাইরাসের চরিত্র বুঝতে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। কী করে এই ভাইরাসকে কাবু করা যায়। সাধারণত ৬০ শতাংশ অ্যালকোহলের মতো সাবান ও ক্লোরিন দ্রবণ করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলতে পারে। ৬০-৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলে ভাইরাসের মৃত্যু হবে। ৪৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে এটি নির্জীব হবে এবং সংখ্যায় কমবে। আবার অতিবেগুনি রশ্মি সাহায্যে কয়েক সেকেন্ডে করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করা যায়।

নতুন গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর দাবি। সেখানে বলা হচ্ছে আয়োডিন দ্রবণ করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তিন ধরনের পভিডোন-আয়োডিন দ্রবণকে (০.৫ শতাশ, ১.২৫ শতাংশ ও ২.৫ শতাংশ) করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে নিয়ে আসা হলে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। একই পরীক্ষা ইথানল অ্যালকোহল নিয়েও করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে পরীক্ষা একেবারেই ফলপ্রসূ হয়নি।

কানেক্টিকাট স্কুল অব মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের দাবি ০.৫ শতাংশের দুর্বল আয়োডিন দ্রবণের সামনেও যেভাবে করোনা ভাইরাস বেকায়দায় পড়েছে তা দেখে বিস্মিত তারা। ‘জামা ওটোল্যারিঙ্গোলজি- হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’ পত্রিকায় ওই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এর আগেও একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, আয়োডিন দ্রবণ সার্স জাতীয় ভাইরাসকে কাবু করতে সক্ষম হতে পারে।

গবেষকদের দাবি, এই দ্রবণ প্রয়োগ করলে ১৫ সেকেন্ড যথেষ্ট ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে। তাদের পরামর্শ এই দ্রবণ যদি নাসারন্ধ্র দিয়ে জীবাণুনাশক হিসেবে প্রয়োগ করা যায় তাহলে ড্রপলেটের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে। গবেষকদের আরও দাবি, যদি কোনও ব্যক্তির শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের চিহ্ন দেখা যায় সেক্ষেত্রেও আয়োডিন দ্রবণ প্রয়োগ করলে তা ভাইরাসকে ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছতে আটকাতে পারবে।

করোনা আবহে আয়োডিন যুক্ত বেশি বেশি খাবার খাওয়া দরকার। পৃথিবীতে আয়োডিনের অভাবে প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রভাবিত এবং মানষিক প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গতা রোগে আক্রান্ত। আমরা জানি আয়োডিন হচ্ছে একটি মৌলিক পদার্থ। মৌল আয়োডিন বাষ্পের রঙ বেগুনি। পৃথিবীতে আয়োডিন প্রধানত পাওয়া যায় মহাসাগর এবং সমুদ্রের পানিতে দ্রবণীয় অবস্থায় আয়োডিন আয়ন আই− রূপে।

আয়োডিন আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি খাদ্য উপাদান বা মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। এটি আমাদের শরীরে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে সহায়তা করে। এর অভাবে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশেই আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের দেশের শতকরা প্রায় ৪৭ ভাগ লোক আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। আমাদের দেশে আয়োডিনের অভাবজনিত প্রতিবন্ধী লোকের সংখ্যা কয়েক কোটি। দেশের কোনো অঞ্চলকেই আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যামুক্ত বলা যাবে না।

(ঢাকাটাইমস/২০ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঐকমত‍্য কমিশনের কাজের অগ্রগতি এখনো অস্পষ্ট: এবি পার্টি 
নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম ও নাশকতা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
ই-কমার্সকে দারিদ্র্য বিমোচনের কম্পোনেন্ট করতে চাই: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
২১ মে থেকে পুনরায় ফ্লাইট চালু করছে নভোএয়ার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা