আপেল সিডার ভিনেগারে নিমেষে ব্যথা উধাও

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪৬ | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৪০

কয়েক হাজার বছর আগে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করা হতো। খাবার সংরক্ষণ করতেও ব্যবহার করা হয় আপেল সিডার ভিনেগার। আপেল সিডার ভিনেগার ভিজানো আপেলের রস থেকে তৈরি ভিনেগার, এবং সালাদ ড্রেসিংস, মেরিনেডস, ভিনাইগ্রেটস, ফুড প্রিজারভেটিভস এবং চাটনিতে ব্যবহৃত হয় । মেদ ঝরাতে এই অ্যাসিড বেশ কার্যকর।

শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিসের ইনসুলিনের লেভেল ঠিক রাখা থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা, চুলের খুশকি ও ড্রাইনেস দূর করতেও এই উপাদান এর জুড়ি নেই। আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধী শক্তি। মেটাবলিক রেট ও বুস্ট করতে সাহায্য করে।

সকালে হালকা গরম পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগারের যা গুণ, তা অনেক ডায়েট ফুডেরই নেই। এভাবেই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজনের মধ্যে পরিচিত এই উপাদানটি। কিন্তু জানেন কি, ব্যথা-বেদনার অব্যর্থ ওষুধও আপেল সিডারে ভিনেগার। বিশেষত হাঁটুর ব্যথা উপশমে এর উপকারিতা অনেক। এমনই দাওয়াইয়ের কথা শোনাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

আপেল সিডার ভিনেগার সম্পূর্ণ এক প্রাকৃতিক উপাদান। ফলে তা যে কোনও চিকিৎসায় ওষুধের মতো ব্যবহার করলে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না। ভিনিগার মানেই মূলত অ্যাসিড। আপেল থেকে উৎপাদিত এই অ্যাসিড হাঁটু কিংবা শরীরের যে কোনও অস্থিসন্ধিতে জমে থাকা টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে শরীরে থাকা খনিজগুলোর কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়া শরীরে ভিতরে গিয়ে তা তেলের মতো কাজ করে, যার জেরে যন্ত্রণার উপশম হয়। বিভিন্নভাবে আপনি এর ব্যবহার করতে পারেন। সেসব উপায়ও বাতলে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

কখনওই সরাসরি আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করবেন না। অ্যাসিড হওয়ায় তা আপনার চামড়া কিংবা শরীরের অভ্যন্তরে ক্ষতি করতে পারে। অন্তত খানিকটা পানিতে তা মিশিয়ে তবেই ব্যবহার করুন –

দু’কাপ পানি মিশিয়ে নিন দু’চামচ ভিনিগার। এরপর দিনে বারবার সেই পানি খান। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে একেবারে ভিনেগার মেশানো পানিও খেতে পারেন। কয়েকদিন পর লক্ষ্য করবেন, হাঁটুর ব্যথা কিছুটা হলেও কমেছে।

গোসলের সময় বাথটাবের হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন দু’কাপ অ্যাপল সিডার ভিনিগার। দিনের ৩০ মিনিট সেই জলে স্নান করুন। স্নান না করলেও হাঁটুর যে অংশে ব্যথা, তার উপর এই পানি দিয়ে অন্তত আধঘণ্টা শুশ্রূষা করুন। হাতেনাতে ফল পাবেনই।

নারিকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে ১:১ অনুপাতে মিশিয়ে নিন আপেল সিডার ভিনিগার। এরপর হাঁটুর যে অংশে ব্যথা, তাতে ভাল করে মালিশ করুন। দিনে একবার বা দু’বার এভাবে মালিশ করলে খুব সহজে চটজলদি আরাম পাবেন।

গলাব্যথার ক্ষেত্রে আধা কাপ হালকা গরম পানিতে দু’চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ও মধু মিশিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন অনেকটা।

অল্প পরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার পানিতে মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি দিয়ে নিয়মিত কুলকুচি করলে দাঁতের ঔজ্জ্বল্য ফিরে আসতে সময় লাগে না। দাঁতের ব্যথাও উপশম হয়।

যেভাবে বানাবেন আপেল সিডার ভিনেগার

বাড়িতে বানানোর আগে জেনে নিতে হবে যে কিভাবে এই আপেল সিডার ভিনেগারটি প্রস্তুত হয়ে থাকে। ইস্ট ও ব্যাকটেরিয়া আপেলের রসকে অ্যালকোহলে পরিণত করে এবং পরবর্তীতে সেটা অ্যাসিটিক এসিডে রূপান্তরিত করে গাঁজিয়ে দেয়। শেষ ধাপে তা ভিনেগারে পরিণত হয়। কিন্তু দিনে দুই চামচ এর বেশী কখনোই একবারে খাবেন না তাতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

উপকরণ

৩টি আপেল, ২চামচ চিনি, পানি ও সাদা ভিনেগার।

পদ্ধতি

প্রথমে আপেলগুলোকে ফ্রেশলি চপ করুন ও জলে ভালো মতো ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এবার অপেলগুলোকে কিছুক্ষণ ফেলে রাখুন যতক্ষন না ওগুলোতে বাদামী বর্ণ ধরছে। বাদামী হয়ে এলে ওগুলো একটা কাঁচের জারে ভরে রাখুন। পরবর্তীতে পরিমাণমতো পানি ঢালুন জারের ভেতর। পানি এমনভাবে ঢালবেন যাতে সমস্ত আপেলের টুকরোগুলো জলের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে থাকে। এরপর যোগ করুন ১ চামচ চিনি ও ভালো করে নাড়াতে থাকুন। কিছুক্ষণ নাড়ানোর পর তাতে ২ চামচ মতো সাদা ভিনেগার দিয়ে দিন ও ভালো মতো নাড়াতে থাকুন।

শেষে আরো ১ চামচ চিনি দিয়ে জারের মুখ বায়ুনিরুদ্ধ করুন। চিনি ওই মিশ্রণে এজেটোব্যাক্টর জন্মাতে সাহায্য করবে যাতে ফার্মেন্টেশন ভালো হয়। এবার জারটিকে একটি অন্ধকার ও ঠান্ডা জায়গায় ৩ সপ্তাহ মতো স্টোর করুন। তারপর আপেলের টুকরোগুলো তুলে ফেলে দিন। নাড়িয়ে নিয়ে স্বাদ নিয়ে দেখুন টক স্বাদ এসেছে কিনা, তাহলেই বুঝবেন আপনার জিনিস তৈরি।

সঠিক নিয়ম মেনে না খেলে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার থেকে আপনার বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ভরপেট খাবার খাওয়ার ঠিক পরেই কি আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার অভ্যেস আপনার? তাহলে এই অভ্যেস এখনই ত্যাগ করুন। খালি পেটে খেলে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খাবেন না। এটি খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট সোজা হয়ে বসে থাকবেন। না হলে অম্বল হয়ে যেতে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ অক্টোবর/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

শিবনারায়ণ দাশের চোখে আলো দেখছেন মশিউর-আবুল কালাম

মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: স্বাস্থ্যপ্রতিমন্ত্রী

বিএমডিসি ছাড়া ‘ভুল চিকিৎসা’ বলার অধিকার কারো নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

নারী মাদকসেবীদের চিকিৎসায় দশ বছরে আহ্ছানিয়া মিশন

সুস্থ আছেন জোড়া মাথা আলাদা করা দুই শিশু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা বরদাস্ত করব না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা, ঢাকা কতটা ঝুঁকিতে?

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস: জানুন মশাবাহিত এ রোগ প্রতিরোধের উপায়

গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি

ঔষধি গাছ থেকে তিন শতাধিক ওষুধ তৈরি হচ্ছে ইরানে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :