গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৯ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ২৪ ঘণ্টায় দখলদার ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৯ জন নিহত হয়েছেন। এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৩৬২ জন। সোমবার সন্ধ্যার পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৪৯৯ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৫ জন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কেবল হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানো নিহত ও আহতদেরই এ পরিসংখ্যানে ধরা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা বা সড়কে পড়ে থাকা বহু মৃতদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি। উদ্ধার সরঞ্জামের অভাব এবং অব্যাহত বোমাবর্ষণের কারণে প্রকৃত নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গাজায় সামরিক হামলার পাশাপাশি খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অপুষ্টি ও খাদ্যাভাবজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ২২২ জনের, যাদের মধ্যে ১০১ জনই শিশু। শুধু সোমবারই অপুষ্টিতে মারা গেছে এক শিশুসহ ৫ জন।
ত্রাণ সংগ্রহে আসা সাধারণ ফিলিস্তিনিদেরও লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৭৭২ জন। এসব হতাহতকেও সামগ্রিক পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামাসের যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা। এর জবাবে গাজায় বৃহৎ আকারের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।
টানা ১৫ মাসের অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও গত ১৮ মার্চ থেকে ফের অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে প্রায় পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন আরও ৯ হাজার ৯৮৯ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৪১ হাজার ৫৩৫ জন।
বর্তমানে হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৫ জন জীবিত থাকার কথা জানিয়ে তাদের উদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার গাজায় অভিযান বন্ধের আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন— হামাসকে পুরোপুরি অকার্যকর করা ও জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
(ঢাকাটাইমস/১২ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন