রি-রোলিং মিলের ধোঁয়ায় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

আতাউর রহমান সানী, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
  প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৩:৫৫| আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৪০
অ- অ+

আল-আসয়োত ও হযরত শাহ সুন্দর নামে দুটি রি-রোলিং মিলের ধোঁয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার ৫ হাজার বাসিন্দা। তাদের অভিযোগ, কারখানার ধোঁয়া ও উড়ে আসা কয়লা এলাকার লোকজনের চোখে-মুখে গিয়ে পড়ছে। ফলে লোকজন শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছেন। হুমকির মুখে পড়েছে ওই এলাকার জনস্বাস্থ্য। এছাড়াও আশপাশের গাছপালা ও মাছের খামারে মড়ক দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম-নীতি ও পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিনিয়ত পরিবেশ বিপর্যয় ঘটালেও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কালো ধোঁয়ার কোনো সুরাহা না হলে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার কর্ণঘোপ এলাকার হযরত শাহ সুন্দর ও আল-আসয়োত রি-রোলিং কারখানা দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ নষ্ট করে আসছে। কারখানার কালো ধোঁয়া ও কয়লা এলাকাবাসীর মারাত্মক ক্ষতি করছে। এলাকার গাছপালায় দেখা দিয়েছে মড়ক। বেশকিছু পুকুরের মাছ মরে যাচ্ছে। লোকজন শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে।

কথা হয় কারখানার পাশে বসবাস করেন এমন দুই নারীর সঙ্গে। বিলকিস ও কোহিনুর নামে এ দুই নারী শ্রমিক বলেন, ‘যহন ধুঁয়া ছাড়ে তহন চোখ-মুখ ঝইলা যায়। আর কয়লা উইড়া আইয়া চোখ-মোহের ভিতরে যায়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক দোকানি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘আমরা শান্তিতে নাই। ক্ষমতা থাকলে এই মিল ভাইঙ্গা দিতাম। মানুষ কতো কষ্টে আছে, এইডা এই এলাকায় থাহে তারা বুঝে। গাছপালা মইরা যাইতাছে। পুকুরের মাছ চাষ কইরাও শান্তি নাই। মাছ মইরা যাইতাছেগা।’

চায়ের দোকানে বসা কয়েকজন বলেন, ‘কারখানার পাশেই কর্ণঘোপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। করোনার আগে স্কুল যখন খোলা ছিল, তখন ছাত্রছাত্রীরা কারখানার ধোঁয়া ও শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে যেত। এখানকার মানুষ শান্তিতে নাই।’

আব্দুল আজিজ নামে এক মাছের খামারি বলেন, ‘ঋণ করে নিজের পুকুরে মাছের চাষ করেছিলাম। মিলের কয়লা পুকুরে পড়ে সব মাছ মরে গেছে।’

এ বিষয়ে কাউন্সিলর রাসেল সিকদার বলেন, ‘সরেজমিনে বিষয়টি আমি দেখিনি। যেহেতু আবাসিক এলাকায় এ কারখানা রয়েছে। সেহেতু গাছপালাসহ পরিবেশের ক্ষতি হবে এটাই স্বাভাবিক।’

এদিকে আল-আসয়োত কারখানার মালিক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কয়লা তো আমার একার নয়। সামনে আরেকটা আছে। আমার কারখানায় ধোঁয়া হয় না। আমার পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে। তারপরও যদি মানুষের ক্ষতি হয়, সেটা যেন না হয় খেয়াল রাখব।’

নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ার বলেন, ‘সরেজমিনে না গিয়ে এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।’

(ঢাকাটাইমস/২ডিসেম্বর/পিএল)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৭ কোটি মার্কিন ডলার
নিবন্ধন স্থগিত হলেও ইসির তফসিলে থাকছে ‘নৌকা’, অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না ‘শাপলা’
ঋণের টাকার চাপে গৃহবধূর আত্মহত্যা
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগে বিএনপির নতুন প্রস্তাব
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা