প্রচলিত কুসংস্কারের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

কুসংস্কার মানুষের অযৌক্তিক যেকোনো বিশ্বাস বা অভ্যাস। সমাজে প্রচলিত কিছু কুসংস্কারের কারণে অনেক সময় পিছিয়ে পড়তে হয়। সাধারণত কুসংস্কার অজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত হয়। বিজ্ঞান বা এর কার্যকারিতা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হওয়া, ভাগ্য বা জাদুতে ইতিবাচক বিশ্বাস অথবা যা অজানা তা থেকে ভয় পাওয়া। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমাদের পূর্বপুরুষেরা দৈনন্দিন জীবনের জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন বিধি তৈরি করেছিলেন, যা পরে কুসংস্কারে পরিণত হয়েছে। প্রচলিত কিছু কুসংস্কারের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়া হলো।
ভাঙা আয়নায় মুখ দেখা
ভাঙা আয়নায় মুখ দেখলে নাকি বাড়ির অমঙ্গল হয়৷ অসুস্থ হতে পারেন পরিবারের প্রিয় জন৷ আসল কারণ হল ভাঙা আয়না বাড়িতে থাকলে, যে কোনও সময় দুর্ঘটনা বশত হাত কেটে যাওয়ার আশংকা থাকে৷
যাত্রা পথে বিড়াল রাস্তা পার হলে
কালো বিড়ালকে আদিকালে মানুষ শয়তানের রূপ মনে করতেন। তাই ভারতীয় মহাদাশে কেউ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কালো বিড়াল দেখলে থমকে দাঁড়ান। অনেক গাড়ি চালক এই নিয়ম মেনে থাকেন৷ কারণ ধরা হয় বিড়াল রাস্তা কাটলে নাকি, তা যাত্রা পক্ষে অশুভ৷ আসল কথা হল, অনেক সময় বিড়ালকে তাড়া করে বড় কোনও পশু৷ যা গাড়ি বা মানুষের সামনে এসে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা থাকে৷
সূর্যাস্তের পর নখ কাটা
এই কাজ করলে যিনি নখ কাটছেন, তার গভীর অসুখ ধরা পড়ে বলে কুসংস্কার চালু রয়েছে৷ তবে এর পিছনে আসল কারণ হল আলোর অভাবে নখ কাটার সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ কেটে যেতে পারে হাত বা পা৷
গভীর রাতে পেঁচার ডাক
রাতে পেঁচা ডাকলে নাকি গৃহস্থের অমঙ্গল হয়৷ কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মেই পেঁচা রাতে ডাকে৷ এই সময় ইঁদুর ধরতে পেঁচা মাটিতে নেমে আসে ও ডাকে৷ তাই গভীর রাতে পেঁচার ডাক শুনতে পাওয়াটা অতি সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি ব্যাপার৷
গায়ে টিকটিকি পড়া মানেই মৃত্যু
এরকম একটা ধারণা প্রচলিত রয়েছে আমাদের মনে৷ তবে এর পিছনে যুক্তি গ্রাহ্য ব্যাখ্যা হল টিকটিকি খুবই বিষাক্ত একটি প্রাণী৷ এর থেকে দূরে থাকাই বাঞ্ছনীয়৷ তাই এই সংস্কারের চল হয়েছে৷
পিছন থেকে ডাকা
যাত্রা করার সময় কেউ পিছন থেকে ডাকলে, তাকে অশুভ বলে মনে করা হয়৷ এতে নাকি যাত্রা ভঙ্গ হতে পারে৷ তবে এর পিছনে ব্যাখ্যা হল কেউ পিছন থেকে ডাকলে অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷
রাতে ফুল না ছেঁড়া
রাতে গাছে ফুল তুললে বা পাতা ছিঁড়লে শারীরিক ক্ষতি হয়, বা বাড়ির অমঙ্গল হয়৷ এর প্রধান কারণ হল রাতে গাছে অনেক বিষাক্ত কীট পতঙ্গ থাকে৷ ফুল ছিঁড়তে গেলে সেগুলোর কামড়ানোর আশংকা থাকে৷ তাই গাছে হাতে দিতে বারণ করা হয়৷
অশ্বত্থ গাছে নাকি ভূত-প্রেত থাকে
রাতে গাছের নিচে গেলে ভূতে ধরতে পারে। এইসব কথা অনেকেই শুনেছেন। যেটা একদমই ভুল। আসলে, অশ্বত্থ গাছ দিনের বেলা অক্সিজেন ত্যাগ করে এবং রাতে কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়ে, সেজন্য রাতে গাছের নিচে যেতে নেই।
(ঢাকাটাইমস/২১ ডিসেম্বর/আরজেড/এজেড)

মন্তব্য করুন