চাঁদপুরে ভাবিকে হত্যায় যুবকের যাবজ্জীবন

চাঁদপুরে ভাবিকে হত্যার দায়ে মো. ইয়াছিন মিজি (২২) নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রবিবার শেষ বিকালে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ এস.এম. জিয়াউর রহমান এই রায় দেন।

জানা গেছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে চাকরির জন্য বিদেশ পাঠানোকে কেন্দ্র করে বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে শারমীন আক্তার (২১) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ইয়াছিন। সাজাপ্রাপ্ত ইয়াজিন সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর (মমিনপুর) গ্রামের মিজি বাড়ীর আবদুর রহিম মাওলানার ছেলে।

হত্যার শিকার শারমীন আক্তার আসামির বড় ভাই ইউসুফ মিজির স্ত্রী এবং ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড উত্তর কেরোয়া পাটওয়ারী বাড়ীর তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী মেয়ে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, শারমিন আক্তারের সাথে ইউসুফের সাথে ২০১৫ সালে বিয়ে হয়। ইউসুফ সৌদি প্রবাসী। বিয়ের পরে বিদেশে চলে যান। এরপরে ইউসুফের ছোট ভাই আসামি ইয়াছিন তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য ভাই-ভাবিকে চাপ প্রয়োগ করেন। দীর্ঘ দিন তাকে বিদেশে না পাঠানোর কারণে ভাবিকে সন্দেহ করেন। ভাবির কারণেই তাকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না ভাবতে থাকেন। এমন অবস্থায় ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ইয়াছিন তার বড় ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ভাকি শারমিনকে উপর্যপুরি আঘাত করেন। এতে শারমিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমিনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে শারমিনের পিতা তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং মেয়ের মেয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ইয়াছিন মিজিকে আসামী করে চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ আসামি ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করে।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার তৎকালীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মফিজুল ইসলাম তদন্ত শেষে ওই বছর ৩০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোক্তার আহমেদ অভি বলেন, তিন বছরের অধিক সময় মামলাটি চলমান অবস্থায় ১৮জন সাক্ষীর মধ্যে আসামির পিতা, মাতা ও বোনসহ ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামি ইয়াছিনের উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

মামলার বাদী তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি আমার মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার পাইনি। আমি ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাব।

ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/ইএস