ঘরে পর্যাপ্ত হাওয়া চলাচল করতে দিন

রহমান রানা
  প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৩৪
অ- অ+

কোভিড রোগ শুধুমাত্র হাঁচি, কাশি, কফ, থুতু দিয়ে ছড়ায় না। বা এটি পোষাক, জুতো, আসবাবপত্র, ধাতু, চামড়া এসব দিয়ে ছড়ায় না। রোগীর ব্যবহার করা কোনো জিনিস এর স্পর্শে এলেই এই রোগ ছড়ায় না। যানবাহন এর হাতল, সিঁড়ি এসবের মাধ্যমে ছড়ায় না। এই জীবাণু ছড়ায় রোগীর কথা, নিঃস্বাস বায়ু, হাসি, চিৎকার এমনকি গান থেকেও। জীবাণু বাতাসে মেশে এবং বাতাসে বহুক্ষণ সক্রিয় থাকে।

যেহেতু বৃহৎ অংশের রোগীর কোনোরকম উপসর্গ থাকে না বা খুব হালকা উপসর্গ থাকে, তাই এই আপাত সুস্থ রোগীরাই বেশিরভাগ রোগ ছড়ায়। বাস্তবে যত কোভিড রোগী পাওয়া গেছে তার ৫২ শতাংশ মতন রোগীর উৎস উপসর্গ হীন রোগী।

ঘরের বাইরে থেকে ঘরের ভিতরে রোগ হবার সম্ভাবনা বহুগুণ বেশি এবং সে রোগ ভয়াবহ হবার সম্ভাবনাও ঘরেই অনেক বেশি। বারবার হাত ধুয়ে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করে, বাইরে থেকে ফিরেই জামাকাপড় স্যানিটাইজ করলে কোনো লাভ নেই। নিসন্দেহে প্রমাণিত যাঁরা বাইরে ঘুরেছেন তাঁদের চেয়ে যাঁরা ঘরে বদ্ধ থেকেছেন, তাঁদের রোগ হয়েছে বহুগুণ বেশি, এমনকি ভেন্টিলেটর এর প্রয়োজন বা মৃত্যুও হয়েছে তাঁদের অনেকগুণ বেশি।

বাস্তবে মৃতদের প্রায় ৮৬ শতাংশই ঘরে বদ্ধ ছিলেন। এই গৃহবন্দী নিয়ে রিপোর্টঁ এ বহু বিস্তারিত আছে। বলা হয়েছে ঘরের থেকে রাস্তা, বড় বাগান, জঙ্গল, নদী এসব এলাকা বহুগুণ ভালো। এমনকি ঘরের থেকে শপিং মলও ভালো বলা হয়েছে, কারণ সেখানে জায়গা অনেক বেশি, তাই বাতাসে জীবাণুর ঘনত্ব কম।

ঘরের থেকে স্কুল, কলেজ অনেক অনেক নিরাপদ প্রমাণ করা হয়েছে। ল্যানসেট তাই সারা বিশ্বে বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ, চীন এসব ঘনবসতিপূর্ণ দেশে অবিলম্বে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে বলা হয়েছে। এতে শিক্ষার উন্নতির সাথে শিশু কিশোরদের কোভিড হবার সম্ভাবনাও অনেক কমে যাবে।

লকডাউন এই রোগ নিয়ন্ত্রণে কোনো উপকারী তো নয়ই, বরং দীর্ঘদিন ঘরে বন্দী থেকে শহর এলাকায় এই রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এই ঘরে আবদ্ধ দশা না কাটালে সামনে ভয়াবহ রূপ দেখা যাবে, যা এখনো কল্পনার বাইরে।

ঘরে থাকার সময় দরজা জানালা যত বেশি সম্ভব খোলা রাখতেই হবে। বাড়ির ভিতরে হাওয়া চলাচল না হলে সে বাড়ি ত্যাগ করাই শ্রেয়। কারণ এই রোগ অন্তঃত আরো ১২-১৫ বছর থাকবেই।

১৬ বছরের বেশি সবাইকে টিকা নিতে হবে, দ্রুত আরো কম বয়সের শিশুদের এই টিকার আওতায় আনতে হবে।

ঘন বসতিপূর্ণ শহরে এই রোগ অতিমাত্রায় ক্ষতিকর থাকবেই। আধা শহর বা গ্রামে এই রোগ অল্পদিনেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

বলা হয়েছে, প্রত্যেকের নিজের পাশের ৫০০ মিটার এলাকায় কোনো রোগী থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। বলাই বাহুল্য, বড় শহরে একজনের ৫০০ মিটার এলাকায় এ যত মানুষ থাকেন, একটা গোটা গ্রামে তত মানুষ পাওয়া যাবে না।

দেখা গেছে একজনের বাড়ির ৭ টা বাড়ি পরে অন্যজনের কোভিড থেকে ওই ব্যক্তির রোগ ছড়িয়েছে। এরকম উদাহরণ লক্ষ লক্ষ। বাড়ির দেওয়াল, দরজা চোর আটকাতে পারলেও আরএনএ ভাইরাস আটকাতে পারে না। আর বদ্ধ ঘরে বাতাসে জীবাণুর ঘনত্ব অনেকগুণ বেশি হয়, তাই রোগ ভয়াবহ হয়।

দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকুন, পারলে মাঝে মাঝেই একটু ফাঁকা জায়গা, গ্রাম, এসব এলাকায় যান। ফুসফুসের জীবাণু কমে যাবে। পারলে ঘন জনবসতি এলাকা ছেড়ে একটু আধা শহর এলাকায় বসবাস করুন।

লেখক: গবেষক

ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ছাগলনাইয়ায় ৪ বিজিবির উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ
পুলিশ হেফাজতে বিষপান করা নারী ঢামেকে মারা গেছেন, দায়িত্বে অবহেলায় তিন পুলিশ বরখাস্ত
ফেনীতে বন্যার পানি একদিকে নামছে, অন্যদিকে বাড়ছে
কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোডে স্থাপন করা হবে ‘প্রতিরোধ মিনার’ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা