কুমুদিনীতে করোনা পরীক্ষায় ৫০০ টাকা ফি নেয়ার অভিযোগ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২১, ২১:২৮
অ- অ+

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা উপসর্গ রোগীদের করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহে ৫০০ টাকা ফি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংগ্রহকৃত নমুনার সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকার নির্ধারিত ১০০ টাকাই জমা দিচ্ছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। এ নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কুমুদিনী হাসপাতালের এজিএম (অপারেশন) অনিমেষ ভৌমিক বলেছেন, যাতায়াত খরচের জন্য এ টাকা নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনার উপসর্গ থাকা রোগীরা নমুনা দিলে ১০০ টাকা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীরা রোগীর বাড়িতে এসে নমুনা নিলে সরকার নির্ধারিত ৩০০ টাকা ফি নিয়ে থাকেন। মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ল্যাব মো. জুয়েল হোসেন কমপ্লেক্সের সপ্তাহের রবি, মঙ্গল ও বুধবার করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে থাকেন। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় কমপ্লেক্সের বাইরে গিয়ে এখন নমুনা সংগ্রহ করা হয় না বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৬ জন, ১৮ এপ্রিল ৫ জন ও ২২ এপ্রিল ১০ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাঠায়। নমুনার সাথে প্রত্যেকের জন্য তারা ১০০ টাকা করে ফি জমা দিলেও বাকি ৪০০ টাকা করে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নেয়। এ নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের কাওয়ালজানি গ্রামের আমেনা আক্তারের মেয়ের জামাই মো. মনির হোসেন জানান, তার শ্বাশুরির করোনা উপসর্গ পরীক্ষার জন্য কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৫০০ টাকা ফি নিয়েছেন।

কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাসাইল উপজেলার করটিয়া এলাকার সুমিতা রানীর ছেলে সন্তোষ জানান, তার মা হার্টের সমস্যা নিয়ে তিনদিন আগে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি হন।

সখিপুর উপজেলার সুরবান সরকারের মেয়ে অরুনা সরকার বলেন, ঠান্ডা ও জ্বর নিয়ে গত সোমবার তার মাকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মির্জাপুর উপজেলার ভাদগ্রাম ইউনিয়নের কুইচতারা গ্রামের শহরভানুর মেয়ে বেদেনা ও মেয়ের জামাই মাহমুদ জানান, জ্বর, বমি নিয়ে গত শনিবার তার মাকে কুমুদিনী হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ৬৫ নম্বর বেড়ে ভর্তি করা হয়।

একই উপজেলার ভাদগ্রামের জুসুদা রানীর ছেলে বিকাশ জুহানী ও জামুর্কী ইউনিয়নের বানিয়ারা গ্রামের হাসনা বেগমের ছেলে আব্দুর রহমান জানান, তাদের মায়েদের ৪/৫ দিন আগে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত বুধবার তাদেরসহ ১০ জন রোগীর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে ৪০০ টাকা করে বেশি নিয়েছেন বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

কুমুদিনী হাসপাতালের এজিএম (অপারেশন) অনিমেষ ভৌমিক বলেছেন, করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের কাজে কেউ আগ্রহ দেখান না। এছাড়া যাতায়াত খরচের বিষয়ও আছে। ৫০০ টাকা করে নেয়া হলেও নমুনার সাথে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০০ টাকা করে ফি জমা দেয়া হয়। বাকি টাকা নমুনা সংগ্রহ ও যাতায়াত খরচের জন্য রাখা হয় বলে তিনি জানান।

কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সরকারি নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা। কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি ফি বাদে তাদের খরচ বাবদ অতিরিক্ত ১০০ টাকা নিতে পারেন। এর বেশি নেয়া হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আড়াই কোটি টাকার মোবাইল ডিসপ্লে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ 
লঙ্কান ঘূর্ণিতে ৫ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট হারাল বাংলাদেশ
ডিপ্লোমাধারীদের সিডিসি প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ৫ দাবিতে মেরিনার্স কমিউনিটির মানববন্ধন
কুমিল্লার পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা