গভীর রাতে খাবার নিয়ে বৃদ্ধার পাশে এএসপি শামীম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২১, ১৫:২৮
অ- অ+

আরও একবার মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করলেন চট্টগ্রামের এএসপি (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। সপ্তাহখানেক আগে যে মাদক চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছিলেন, এবার ঈদের আগের রাতে (চাঁদ রাত) সেই মাদক চোরাকারবারির দুই দিনের উপোস থাকা বিধবা মায়ের কাছে ব্যাগভর্তি মাছ, মাংস, সেমাই, চিনি এবং পোলাওর চাল নিয়ে হাজির হয়েছেন।

একজন মাদক চোরাকারবারির পরিবারের সদস্যের বিপদের মুহূর্তে ত্রাতার ভূমিকায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা! গত বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাইখালি গ্রামে ওই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ান এএসপি শামীম।

কয়েকদিন আগে ৫০ লিটার মদসহ আটক হয়ে কারাগারে আছেন মাদক চোরাকারবারি রিয়াদ হোসেন। সন্তান কারাগারে থাকায় বিপাকে পড়েন তার মা। বিষয়টি জানতে পেরে গভীর রাতে সার্কেল এএসপি শামীমসহ ৮/১০ জন পুলিশ তাদের বাড়িতে হাজির হন। রিয়াদের বৃদ্ধা মা মঞ্জু বেগম প্রথমে দরজা খুলতে ইতস্তত করলেও পরে পুলিশ সদস্যদের সবার হাতে বাজারের ব্যাগ দেখে আশ্চর্য হয়ে যান। আড়াই কেজিরও বেশি ওজনের রুই মাছ, মুরগিসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীতে ভরা ব্যাগ তার হাতে হস্তান্তর করে ফিরে যায় পুলিশ। তার আগে অসহায় মঞ্জু বেগমকে সান্ত্বনা দিয়ে তার সাথে কিছুক্ষণ কথাও বলেন এএসপি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রেপ্তার রিয়াদ রায়খালি গ্রামের মৃত শামসুল আলমের ছেলে। ৯ মাস আগে হঠাৎ বাবার মৃত্যুর পর থেকে বিধবা মা মঞ্জু বেগমকে নিয়ে রিয়াদ রায়খালির একটি জরাজীর্ণ বাসায় ভাড়া থাকেন। পেশায় রিকশাচালক রিয়াদের আয়েই টেনেটুনে চলতো মা ছেলের দিন।

কিন্তু গত ৫ মে মদসহ রিয়াদ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বিপাকে পড়েন বৃদ্ধা মঞ্জু। অনাহারে অর্ধাহারে কাটতে থাকে তার দিন। গত বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি রোজা রেখেছেন প্রায় সেহেরি ইফতার ছাড়াই। দিনের পর দিন উপোস করার প্রভাব শরীরের ওপরও পড়ে। এছাড়া দিতে পারেননি কয়েক মাসের ঘর ভাড়াও। এমন অবস্থায় ঈদ উৎসবের কথা হয়তো ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি বৃদ্ধা মঞ্জু। এমন অবস্থায় তার পাশে দাঁড়িয়েছেন এএসপি আনোয়ার হোসেন।

জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই আমরা আমাদের বেতন ও ঈদ বোনাসের টাকা থেকে সমাজের অভাবি মানুষদের ঈদের বাজারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এর ধারাবাহিকতায় চাঁদ রাতে আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেঘুরে প্রকৃত অভাবি ও নিঃস্ব মানুষদের হাতে ঈদ বাজার তুলে দিয়েছি।

মঞ্জু বেগমের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর অবস্থা শুনে আমাদেরও খারাপ লেগেছে। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও তার পাশে থাকবে পুলিশ'।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে বৃদ্ধা মঞ্জু বেগম বলেন, ‘আমি ঈদের দিন যে কিছু রান্না করে খাব, সেই চিন্তাও করিনি। তবে আমি আল্লাহর কাছে চেয়েছিলাম, আল্লাহ ব্যবস্থা করে দিয়েছে'।

ঢাকাটাইমস/১৫মে/এসকেএস/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনা-কামালের বিচার শুরুর আদেশ
জামালপুরে সীমান্ত দিয়ে নারীসহ ৭ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
যেকোনো বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি প্রস্তুত: মহাপরিচালক
শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে ৪ তরুণের মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা