পরীমনির বিরুদ্ধে জিডি নিয়ে আসলে কী ঘটেছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ জুন ২০২১, ২১:৪৪| আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ১০:৪৯
অ- অ+
ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানের একটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে চিত্রনায়িকা পরীমনি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ক্লাব কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের ব্রিফ করলেও থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। কোনো কোনো গণমাধ্যম পরীমনির বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে বলে সংবাদ পরিবেশন করেছে।

তবে ঢাকাটাইমসের অনুসন্ধান ও পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, ওই রাতে ক্লাবে পরীমনির অসদাচরণের সংবাদ তখন পুলিশকে জানানো হলে তারা সেখানে গিয়েছিল। পরে বিষয়টি পুলিশের তরফে লিপিবদ্ধ করা হয়।

গত ৮ জুন গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে প্রবেশ নিয়ে নায়িকা পরীমনির সঙ্গে ক্লাব কর্মকর্তাদের বিরোধ হয়। পরদিন রাজধানীর অদূরে ঢাকা বোট ক্লাবে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন পরীমনি। পরে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এই ঘটনা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বুধবার সন্ধ্যায় অল কমিউনিটি ক্লাবের সভাপতি কে এম আলমগীর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ক্লাবে কিছুদিন আগে (৮ জুন) ছোট্ট একটি অঘটন ঘটেছিল। আমাদের ক্লাব বন্ধের সময় হয়ে এসেছিল। তখন কয়েকজন লোক আসে ক্লাবে প্রবেশের জন্য। গেটে দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি গার্ডরা ফোন করে জানায়, তারা কিছুক্ষণ আগে একবার এসেছিলেন। তখন তারা ফোন ও কিছু কাগজ রেখে গেছেন। সেগুলো নেয়ার জন্য তারা আবার এসেছেন।’

আলমগীর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের ক্লাবের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন আছে। বিশেষ করে কোনো মেয়ে যদি ক্লাবে আসে তাহলে তাকে কিছু ড্রেস মেনে আসতে হয়। সেদিন এখানে যারা এসেছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হাফপ্যান্ট এবং স্যান্ডেল পরা। তখন আমাদের কর্মকর্তারা বলেন, আপনারা তো ক্লাবের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তাদেরকে ক্লাব থেকে এটা বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং গ্লাসসহ বিভিন্ন কাচের জিনিস ভাঙচুর করে। পরে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ ডাকা হয়। পুলিশ এলে তারা ক্লাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাদেরকে হেনস্থার অভিযোগ করেন।'

ক্লাব সভাপতি বলেন, ‘ঘটনার সময় তখন রাত একটা থেকে দেড়টা বাজে। বরং এই সময়ে একজন আমাদের ক্লাবের ১৫টি গ্লাস, নয়টি এসট্রে, বেশ কিছু হাফ প্লেট ভাঙেন। পরে আমরা জানি, তার নাম পরীমনি। পুলিশ এসেও এর সত্যতা পায়। পরে পুলিশ ঘটনার বিষয়ে তাদের ঊর্ধ্বতনদের জানায়। তারা ওই পুলিশ সদস্যদের চলে যেতে বলেন।’

পরীমনির বিরুদ্ধে জিডির বিষয়ে বুধবার রাতে গুলশানের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ঢাকা টাইমসকে বলেন, 'গুলশানের ক্লাবটিতে ভাঙচুরের ঘটনায় কেউ থানায় মামলা বা অভিযোগ করেনি। ওইদিন রাতে ৯৯৯ থেকে ফোন আসে পরীমনির সঙ্গে ক্লাবের কাদের যেন ঝামেলা হচ্ছে। পরে আমাদের সদস্যরা সেখানে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পরীমনিসহ যে যার মতো সেখান থেকে চলে যায়। তখন ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোনো জিডি করেনি।'

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'পুলিশের নিয়ম অনুযায়ী থানা এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটলে সেগুলো থানায় জিডি করতে হয়। আমরা নিজেরা নিজেদের জন্যই এগুলো করে থাকি। যেমন- বৃষ্টি বা কোথাও বজ্রপাত হলে, দুর্ঘটনা, ডিউটিতে যাওয়া-আসা, ওয়্যারলেসে কোনো মেসেজ দিলে সেগুলোও জিডি নিয়ে সবাই সিন করে। এটা স্বাভাবিক নিয়ম।'

গত রবিবার রাতে নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পরীমনি জানান, তিনি হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন। পোস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঘটনার বিচার চান তিনি। পরে রাতে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে পরীমনি জানান, নাসির উদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা বোট ক্লাবে ডেকে নিয়ে ওই ঘটনা ঘটান। পরদিন সোমবার সকালে ওই ঘটনায় নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের নামে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। এরপর বিকালের মধ্যে নাসিরসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।

(ঢাকাটাইমস/১৬জুন/এসএস/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ছাত্রদলের লাখো নেতাকর্মীকে শান্ত রেখেছি: রাকিব
সিরাজগঞ্জে কবর থেকে লাশ তুলে বাড়ির উঠানে দাফন
রেলপথ মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্ব পেলেন শেখ মইনউদ্দিন
শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় পর্যায়ের আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সময় চেয়েছে বাংলাদেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা