হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে অগ্নিকাণ্ড
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এবং নির্দেশনা অনুযায়ী মেশিন ব্যবহার না করার কারণে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল। জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের জন্য ওই দুই কারণসহ আরো কয়েকটি কারণের কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এ প্রতিবেদনে আটটি সুপারিশও করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আতাউল গনি জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি তার স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায়নের জেষ্ঠ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা টানা ব্যবহার না করে কিছুটা সময় বিরতি দেয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে বিরতিহীনভাবে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ব্যবহার হয়েছে। ফলে অতিরিক্ত গরম হয়ে এতে আগুন ধরে যায়। অগ্নিকাণ্ডের কারণ হিসেবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, আইসিইউর ভেতর অতিরিক্ত অক্সিজেন সব সময় থাকে। আইসিইউ মেশিন পরিচালনার জন্য দক্ষ কারিগরি জনবলের অভাব রয়েছে। তাই ব্যবহার নির্দেশনা অনুযায়ী মেশিন পরিচালনা করা হয়নি। এখানে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণের অভাব এবং অতিরিক্ত আটটি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা মেশিন প্রতিস্থাপনে দীর্ঘসূত্রকে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বৈদ্যুতিক কোন ত্রুটি, ভোল্টেজের হ্রাস-বৃদ্ধি কিংবা শর্ট সার্কিটজনিত কারণে, এ ছাড়াও বাহ্যিক কোন দায্য পদার্থের উপস্থিতি কারণে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আইসিইউ যন্ত্রপাতি অবশ্যই নিয়মিত দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান এবং আইসিইউ এর তত্ত্বাবধানের জন্য একজন ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও এনেসথেসিয়ান পদায়ন করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও আইসিইউতে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ এবং কোনরূপ মাল্টিপ্লাগ, হিটার, চার্জার ইত্যাদি ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
আবার আইসিইউ চালু করার জন্য আবশ্যিকভাবে সকল দিক ভালভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা এবং হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ব্যবহারে সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক খন্দকার সাদিকুর রহমান জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী টেকনিশিয়ান পদায়নের জন্য স্বাস্থ্যবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর পিডব্লিউডি কাজ করেছে। বিদ্যুতিক সংযোগসহ সবকিছু ঠিক আছে ন্যাশনাল মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের কর্মীরা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখে গেছে। সোমবার সেখান থেকে সর্বোচ্চ একটি টিম আসবে। তারা কাজ করার পর আইসিইউ চালু করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুলাই টাঙ্গাইলের জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ওই দিনই আইসিইউ অকেজো হয়ে যায়।
(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এলএ)