চুয়াডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রী খুনের রহস্য উদঘাটন
প্রবাসী স্বামীর বাড়ি ফেরা নিয়ে পরকীয়া প্রেমিক মামুন মন্ডলের সঙ্গে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় জেসমিন খাতুন আয়নার। এরই জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ভাগ্নে রাব্বিকে ব্যবহার করে শরবতের মধ্যে চেতনানশক ওষুধ মিশিয়ে আয়নাকে পান করায় মামুন। সেদিন রাতে আয়না জ্ঞান হারালে তার ঘরে ঢুকে ড্রেসিং টেবিলের ওপরে থাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কাটে মামুন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)আবু তারেক এসব তথ্য জানান।
এদিকে এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। মামলার প্রধান অভিযুক্ত মামুন মন্ডলসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা আবু তারেক বলেন, জেসমিন খাতুন আয়নার স্বামী কুয়েত প্রবাসী হওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে প্রতিবেশী যুবক মামুন মন্ডলের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে আয়নাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন মামুন মন্ডল। বিয়েতে আয়না খাতুন অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। এরই মধ্যে প্রবাসী স্বামী হাবিবুর রহমান হাবিলের দেশে ফেরার খবরে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মামুন মন্ডল। এরই একপর্যায়ে চালানো হয় এই হত্যাকাণ্ড।
পুলিশ কর্মকর্তা আবু তারেক বলেন, ‘লাশটি বিবস্ত্র অবস্থায় ঘরে পড়ে ছিল। এ থেকে আমাদের সন্দেহ- ওই নারীকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হতে পারে। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। তাই এখনই এ বিষয়টি নিশ্চিত নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার পর থেকেই মাঠে নামে পুলিশ। একদিনের মধ্যেই হত্যার রহস্য অনেকটা উদঘাটন করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বেশ কিছু আলামতও জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি, চেতনানাশক ওষুধ মেশানো পানির গ্লাস, রক্তমাখা কাপড়, মোবাইল ফোন, ঘাতকের স্যান্ডেল ও লুঙ্গি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নতুন যাবদপুর গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পরদিন বুধবার রাতে নিহতের ভাই আব্দুর রউফ বাদী হয়ে বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
(ঢাকাটাইমস/৯সেপ্টেম্বর/কেএম)